‘ঈদে বাড়ি যাওনের টাকা নাই’
‘দুইদিন বাদে ঈদ। পুলাগো (ছেলেমেয়েদের) কাপড় চোপড় কিনে দিতে পারলাম না। কাপড়ের দোকানের সামনে দিয়া গেলে বুকটা ফাইট্টা যায়। বউডা খুব অসুস্থ। তার লাগি টাকা পাঠাতে অইব। ঈদে বাড়ি যাওনের টাকা নাই।’
মোহাম্মদ মোবাশ্বর এসব কথা বলছিলেন। রাজধানীতে পান, সিগারেট বিক্রি করেন তিনি। সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পান-সিগারেট নিয়ে ঘুরছিলেন তিনি। তখনই এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় মোবাশ্বরের।
মোবাশ্বরের বাড়ি হবিগঞ্জে। ঢাকায় থাকেন ১০ বছর ধরে। রাস্তায় হেঁটে হেঁটে সারাদিন পান-সিগারেট বিক্রি করেন। চার ছেলে ও দুই মেয়ের জনক তিনি। বড় ছেলে মোহাম্মদ ফখরুল হবিগঞ্জের একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। অন্য ছেলেমেয়েরাও স্কুলে পড়ে। স্ত্রী জমিলা খাতুন অসুস্থ। মোবাশ্বর পান-সিগারেট বিক্রি করে যা আয় করেন তা দিয়েই চলে এত বড় সংসার!
মোবাশ্বর জানালেন, ঈদুল ফিতরে বহু মানুষ নিজের এলাকায় চলে যাচ্ছে। কিন্তু মোবাশ্বর বাড়িতে যেতে পারবেন না। ছেলেমেয়েদের ঈদের কাপড় চোপড় ও ভালোমন্দ খাওয়া কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাঁর।
মোবাশ্বর বলেন, ‘পুলাগো ঈদে ভালো খাবার খাওয়ানোর টাকা পাঠাতে পারমু না। ঈদ বড় লোকগো। আমাগো কি ঈদ আছে। যার টাকা আছে তার মনে আনন্দ। আমাগো মনে আনন্দ নেই।’
মোবাশ্বর জানান, প্রতিদিন ২০০ টাকা আয় করলেও ঢাকায় থাকা খাওয়ায় তা শেষ হয়ে যায়। বড় ছেলেকে বিএ পাস করিয়ে পুলিশের চাকরি করাতে চান। তিনি বলেন, ‘অন্য পুলাগোও লেখাপড়া করাইতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা খুব গরিব ছিল। লেখাপড়া করায় নাই। হের লাইগ্গা ঢাকায় টাকা কামাইতে আইছি। আমি আমার পুলাগো কোনো কাজ করতে দিমু না। লেখাপড়া করায়া মানুষ করতে চাই।’