বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকনির্দেশনা নেই বাজেটে : সানেম
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলেছে, নির্বাচনের বছরে সংস্কারহীন বাজেট দিয়েছে সরকার, যাতে বড় লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আজ শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে প্রস্তাবিত বাজেট মূল্যায়নে এ মত দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
সানেম মনে করে, বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে, তা অর্জন সম্ভব নয়। এ সময় ব্যাংকিং খাতকে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ না নিয়ে, সরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে বরাদ্দ দেওয়ার সমালোচনা করা হয়। আর করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ টাকা করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি বলে মনে করে সানেম।
এ ছাড়া বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কোনো দিকনির্দেশনা নেই মন্তব্য করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট এসডিজির (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) মহাসড়কে উঠতে না পারার বাজেট।
ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটের বড় দুর্বল জায়গা যদি আমি বলি সেটা হচ্ছে : আমাদের অর্থনীতির যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে এ মুহূর্তে, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা, ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের সংকট আমরা দেখছি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি খাতে স্থবিরতা আমরা দেখছি। এইগুলো কিন্তু আমরা দেখছি যে বাজেটে সেভাবে অ্যাড্রেস করা হয়নি।’
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এ ছাড়া এনবিআরবহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে নয় হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। করবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।