টিকেটের অপেক্ষায় স্টেশনেই রাতভর খেলা
রাকিব, সুমন, কবির আর হাসান যাবেন কুষ্টিয়ায়। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ১৪ জুনের টিকেট কাটতে এসেছেন গতকাল সোমবার সন্ধ্যায়। এর পর থেকে স্টেশনের ভেতরে খবরের কাগজ বিছিয়ে তাস খেলা শুরু করেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কমলাপুর টিকেট কাউন্টারের সামনে এসে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।
রাকিব হোসেন রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'আমরা চারজন গতকাল সন্ধ্যায় এখানে এসেছি। এসে দেখি অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে আজকের টিকেটের জন্য। আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম। কিছু সময় পরে মনে হলো, এভাবে কতক্ষণ! সুমনকে পাঠিয়ে দিলাম কার্ড (তাস) কিনতে। সে ফিরলে খবরের কাগজ বিছিয়ে শুরু করে দিলাম খেলা। এখনো খেলছি।'
কবির হোসেন বলেন, 'শুধু আমরা নয়, এমন কমপক্ষে ৩০টি দল এখানে তাস খেলতে বসেছিল। কী আর করব, সময় তো কাটাতে হবে! সকালে পুলিশ এসে সবাইকে তুলে দিয়েছিল। আমাদেরও তুলে দিয়েছিল। কিন্তু এক আনসারকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে আমরা আবার খেলতে বসেছি।’
পাশে বসে খেলা দেখছেন নজরুল ইসলাম। তিনিও সকাল ৬টা পর্যন্ত তাস খেলেছেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'শুধু আমি না, আরো অনেকে খেলছিলেন। ভালোই লাগছিল। বহুদিন পরে তাস খেললাম। তাও আবার টিকেট কাটতে এসে।’
স্টেশনে দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হারুন অর রশিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'গতকাল বিকেল ৩টা থেকেই সবাই লাইনে দাঁড়ানো শুরু করেছে। সকালে এসে দেখি সামনের সারির সবার চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। তবুও সবাই কেমন উচ্ছ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।’
ঈদ উপলক্ষে গত ১ জুন ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রথম দিন দেওয়া হয় আগামী ১০ জুনের টিকেট। এর পর যথাক্রমে ১১ জুন, ১২ জুন ও ১৩ জুনের টিকেট দেওয়া হয়। আজ মিলছে ১৪ জুনের টিকেট। কাল পাওয়া যাবে ১৫ জুনের টিকেট।
এরপর তিন দিন বিরতি দিয়ে ১০ জুন শুরু হবে বাড়ি থেকে রাজধানী ফেরার অগ্রিম টিকেট বিক্রি দেওয়া। ১৫ জুন পর্যন্ত দেওয়া হবে ফেরার টিকেট। এ পর্যায়ে যাত্রীরা ১০ জুন ১৯ জুনের, ১১ জুন ২০ জুনের, ১২ জুন ২১ জুনের, ১৩ জুন ২২ জুনের, ১৪ জুন ২৩ জুনের এবং ১৫ জুন ২৪ জুনের টিকেট কিনতে পারবেন।