রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সেবায়েত নিয়োগ নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আবেদনকারী পল্টন কুমার দাসকে সেবায়েত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। 

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। 

নিজেকে মন্দিরের জমিদানকারীর আত্মীয় উল্লেখ করে সেবায়েত হতে রিট দায়ের করেন পল্টন কুমার দাস নামের এক ব্যক্তি। রিটে তিনি বলেছেন, গত বছর ভারতে প্রধান সেবায়েতের মৃত্যুর পর থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কেউ সেবায়েতের দায়িত্বে নেই।

এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আবেদনকারী পল্টন কুমার দাসকে সেবায়েত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। 

পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের রায়ে ১৯৯৯ সালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রধান সেবায়েত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, যেটি আপিল বিভাগেও বহাল ছিল। ওই রায়ে বলা আছে, মন্দিরে জমিদানকারী অথবা জমিদানকারীর বংশধররা সেবায়েত নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। রিটকারী পল্টন কুমার দাসের ঠাকুর দা সুধীর কুমার দাস ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জমি দান করেছিলেন। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী মন্দিরের ৫ শতাংশ জমি সুধীর দাসের নামে। সে হিসেবে সেবায়েত হিসেবে রিটকারী পল্টন কুমার দাসের অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। এ কারণে তিনি রিট করেছেন। 

পরে যোগাযোগ করা হলে পল্টন কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতে প্রধান সেবায়েত প্রদীপ কুমার চক্রবর্তীর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কোনো সেবায়েত নেই। বলা যায় মন্দিরটি অভিভাবক শূন্য। প্রয়াত সেবায়েতের দুই ছেলের দুজনই ভারতের নাগরিক। ফলে তাঁদের পক্ষে এ মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্ব নেওয়াও সম্ভব না।

এর মধ্যে মন্দিরটি তত্ত্বাবধানের জন্য প্রধান সেবায়েতের স্ত্রীসহ নয় সদস্যের একটি কমিটি ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালত-৪ থেকে অনুমতি নেয়। কিন্তু সংক্ষুব্ধ একটি পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জুলাই হাইকোর্ট সে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।