কয়লাবোঝাই ‘এমভি বিলাস’ ৪৫ দিন পর উদ্ধার
বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়া এলাকায় ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ এমভি বিলাসকে উদ্ধার করা হয়েছে। ডুবে যাওয়ার দীর্ঘ ৪৫ দিন পর জাহাজটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বুধবার জাহাজটি উদ্ধার করে মোংলার পশুর চ্যানেলের কানাইনগর এলাকায় এনে রাখা হয়েছে। জাহাজটির মাঝামাঝি থেকে ফেটে গিয়ে দুই টুকরা হয়ে যায়। উদ্ধারকারী জলযানের সহায়তায় জাহাজের দুই টুকরা ভাসিয়ে এনে মালিকপক্ষ পশুর নদের চরের কানাইনগরে নিরাপদে রেখেছে।
কার্গো জাহাজের চালক মো. আমির হোসেন জানান, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া-৬ নম্বর অ্যাংকোরেজে থাকা একটি বিদেশি জাহাজ থেকে ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে এমভি বিলাস নামক কার্গো জাহাজটি গত ১৫ এপ্রিল রাতে ডুবো চরে আটকে গিয়ে কাত হয়ে ডুবে যায়। এরপর জাহাজটি উদ্ধারের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ মাত্র ১০ দিন সময় দিলেও সেই সময়ের মধ্যে উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত নৌযান ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে না পারায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করতে বেশ বিলম্ব হয়। এরপর কাজ শুরু করলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হতে থাকে। তারপরও সুযোগ-সুবিধা বুঝে কাজ করতে থাকে উদ্ধারকারী ডুবুরি দল। দীর্ঘ ৪৫ দিন ধরে ডুবন্ত জাহাজের কয়লা উত্তোলনের পর বুধবার দুপুরে জাহাজটি দুটি বার্জের সহায়তায় টেনে তোলা হয়। এরপর দুই পাশে বার্জ রেখে ভাসিয়ে এনে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
নৌযান শ্রমিক নেতা মো. বাহারুল ইসলাম বাহার বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে পশুর চ্যানেল খননের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি ও চ্যানেলে পর্যাপ্ত বয়া বাতি স্থাপন করতে হবে।
বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, বিগত সময়ের তুলনায় মোংলা বন্দরে দেশি-বিদেশি জাহাজের আগমন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে দিনে-রাতে সব সময়ই পশুর চ্যানেল দিয়ে কার্গো-কোস্টারসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করছে। এ নৌপথে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান উদ্ধারে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ) নিজস্ব উদ্ধারকারী নৌযান না থাকার কারণে অন্য জায়গা থেকে তা সংগ্রহ করে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বিলম্ব হয়ে আসছে। ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদ্ধারকারী নৌযান সংগ্রহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, আধুনিক উদ্ধারকারী নৌযান সংগ্রহে কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা রয়েছে। খুব শিগগির বন্দরের নৌবহরে এ ধরনের উদ্ধারকারী নৌযান সংযুক্ত হতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।