বেড়ায় খালের পানিতে ভাসছে সেতু!
দুই পাশের মাটি না ফেলে বা সংযোগ সড়ক না করে সেতু নির্মাণ করায় তা কোনো কাজেই আসছে না; বরং মানুষের দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেতুটি। পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের পাঁচুরিয়া গ্রামের ইছামতি খালের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে এই সেতু।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত সেতুটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৩২ লাখ। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেটা কারো কাজেই আসছে না। স্থানীয়রা বলছেন, ‘এটা ব্রিজ করা না, গ্রামের মানুষের সঙ্গে তামাশা করা।’
এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয়ে পাঁচুরিয়া গ্রামের ইছামতি নদীর প্রধান খালের মধ্যে একটি সেতুটি নির্মিত হয়। ২০১৬ সালের মে মাসে কোনোরকম সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতুটির নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি শমশের আলী মণ্ডল বলেন, যে খালের মধ্যে সেতুটি নির্মিত হয়েছে, তার অপর প্রান্তে রয়েছে পাঁচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাঁচুরিয়া পুর্র্বপাড়া গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম। এত দিন শিক্ষার্থীসহ ওই সব গ্রামের লোকজনকে খাল ঘুরে যাতায়াত করতে হতো। এতে তাদের অনেক বেশি রাস্তা ঘুরতে হতো এবং সময়ও অনেক বেশি লাগত। সে কারণে এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা ত্রাণ বিভাগ। সেতুটি পরিপূর্ণ নির্মিত হলে অতিরিক্ত রাস্তা না ঘুরে সোজা রাস্তায় খাল পার হওয়া সম্ভব। এ জন্য এলাকাবাসী খালের ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন জায়গায় সেতু নির্মিত হলো, যা এলাকাবাসীর কোনো উপকারেই আসছে না।
আরিফুর রহমান নামের স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণের নকশা ও আর্থিক বরাদ্দ করা হয়। এতে সেতু নির্মিত হওয়ার পর দেড় বছরের বেশি সময় পার হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ সংযোগ সড়কের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে সেতু নির্মাণ করা হলে সেটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠতে পারত।
বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের বলেন, স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি তৈরির পর যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।