পথে পথে যাদের ইফতার
নানা ধরনের খাবারের পসরা সাজিয়ে মানুষ যখন ইফতার সারতে ব্যস্ত ঠিক তখন কিছু মানুষ রাস্তার যানজটে কিংবা ফুটপাতে বসে পানি, খেজুর, মুড়ি কিংবা জিলাপিসহ হালকা খাবার দিয়ে ইফতার করছেন। এদের ভেতরে অধিকাংশই শ্রমজীবী মানুষ।
শনিবার ইফতারের সময় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের প্রধান সড়কে ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা যায়।
সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারের আন্ডারপাসের পাশে যানজটে আটকে ছিল শুভেচ্ছা নামের একটি বাস। আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই বাসের চালক আলী ইমাম ইফতার করেন শুধু জিলাপি দিয়ে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কিছু করার নেই। এভাবেই ইফতার করতে হয় প্রতিদিন। দুই একদিন হয়তো বাস থেকে নেমে ইফতার করার সুযোগ হয়।’
আয়াত নামের আরেকটি বাসের চালকের সহকারী (হেলপার) খোরশেদ আলম বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে এভাবে রোজাগুলো কাটে। তবে এই রোজায় গতকালই প্রথম কমলাপুরে বসে ইফতার করেছি।’
কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে মোহাম্মদ ফয়সাল বাক্সের মধ্যে শার্ট বিক্রি করছিলেন। তাঁর পাশেই ফলমূল বিক্রি করছিলেন আবদুস সালাম। এই দুজনসহ আরো কয়েকজন এক সঙ্গে ইফতার করতে বসেছেন। মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘চার-পাঁচজন এক লগে ইফতার করি। ভালাই লাগছে। আমরা গরীব মানুষ। আমাদের জীবনটাই এমন, রাস্তায় রাস্তায় কাটে।’
ফুটপাতে বসে ইফতার করছিলেন মো. গফুর নামের এক বৃদ্ধ। তিনি পেশায় ভিক্ষুক। তাঁর ইফতারে ছিল একটি বক্সে মুড়ি, দুটি আলুর চপ আর এক বোতল পানি। তিনি বলেন, ‘একজন কিছু মুড়ি আর দুইডা চপ দিলেন। এই দিয়েই ইফতার করি।’
জ্যামের কারণে বাসে বসেই ইফতার করছিলেন আশফানা খানম। তিনি বলেন, ‘যাব কমলাপুর। ভাবছিলাম বাসায় গিয়ে ইফতার করব। কিন্তু এত বেশি জ্যাম যে কারওয়ান বাজারও পার হতে পারলাম না।’
কারওয়ান বাজার মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ইরফান হোসেন নামের এক ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে ইফতার করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজই রাস্তায় রাস্তায়। গত চার বছর রমজানের অধিকাংশ দিনই রাস্তায় ইফতার করতে হয়েছে।’