ভৈরবে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে ফের বাসস্ট্যান্ড দখল
কিশোরগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল ভৈরব বাসস্ট্যান্ড দুর্জয়মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাকির হোসেন। এ সময় মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর বিভিন্ন ধারায় ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস না থাকায় সাতজন চালককে সাতটি মামলায় ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে বাসস্ট্যান্ড দুর্জয়মোড় থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পশ্চিমে আলশেফা জেনারেল হাসপাতাল, পূর্বদিকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর টোলপ্লাজা এবং উত্তরদিকে ঢাকা-ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের মুসলিমের মোড় পর্যন্ত এলাকা যানজটমুক্ত হয়। বিকেল ৪টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত, এই পৌনে দুই ঘণ্টা দুর্জয়মোড়ের অসহনীয় যানজটের কবলে পড়ে নাকাল হতে হয়নি জনসাধারণকে।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব বাজারের ব্যবসায়ী খলিল মিয়া বলেন, ‘বাড়ি যাওয়ার পথে অটোতে করে বাসস্ট্যান্ড এসে আমি তো তাজ্জব! যানজটে ২০ থেকে ৩০ মিনিট বসে থাকব বলে হাতে সময় নিয়ে আসলাম। কিন্তু দুর্জয়মোড় পার হয়ে গেলাম মাত্র দুই মিনিটে! পরে জানলাম এসি-ল্যান্ড মোবাইল কোর্ট করছেন। আর এজন্যই দুর্জয়মোড়ে আজ যানজট নাই।’ তিনি দুর্জয়মোড়ের যানজট নিরসনে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।
কিন্তু খলিল মিয়ার তাজ্জব বনে যাওয়া দৃশ্যটা মুহূর্তেই পাল্টে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর। আবার সেই আগের দৃশ্য। রাস্তার দুই পাশ দখল করে বাসগুলো দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা করানো। বাস সার্ভিসের টিকেট কাউন্টারের ফুটপাত দখল করে টিকিট বিক্রি। হকারদের রাস্তা দখল করে বেচাকেনা প্রতিদিনের স্বাভাবিক চিত্র। ফলে আবারও চুম্বক যানজটে নাকাল সাধারণ জনগণ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাকির হোসেন বলেন, কিশোরগঞ্জের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম ও ভৈরব থানার এসআই নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় বিকেল ৪টা থেকে ৫টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। ওই সময় পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরে আসে। চারদিক যানজটমুক্তসহ রাস্তাগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ে। ফলে যানবাহনসহ জনগণ খুব সহজে দুর্জয়মোড় পারাপার হন।
পরের পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবগত নন বলে জানিয়ে বলেন, পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাই সচেতন না হলে দুর্জয়মোড়ের যানজট দূর হবে না। মানুষের দুর্ভোগও লাঘব হবে না।
মোবাইল কোর্ট স্থায়ী সমাধান নয় বলে উল্লেখ করে জাকির হোসেন বলেন, নিরাপদ সড়ক, যানজটমুক্ত যাতায়াত-এগুলো সময়ের দাবি। জীবন, সময় ও অর্থ-সব অপচয় রোধ করতে হলে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জরুরি।