‘মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের মানুষ খুশি’
দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান প্রশংসিত হলেও বিএনপির তা ভালো লাগছে না বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি কখনই মাদক ও জঙ্গিদের বিপক্ষে কথা বলে না।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকাস্থ নোয়াখালী জেলা সমিতি আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাদকবিরোধী যে অভিযান সারা দেশের মানুষ খুশি, প্রশংসা করছে এটা বিএনপির ভালো লাগছে না। শেখ হাসিনার সরকারের এটা একটা জনগণের বহু প্রত্যাশিত একটা অভিযান। এখানে ক্রসফায়ার না, মুখোমুখি মাদক ব্যবসায়ীরা, তাদের কাছে অস্ত্র আছে। তাঁরা যদি মোকাবিলা করে পুলিশ কি ছেড়ে দেবে নাকি?’
গত কয়েকদিন ধরে দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৩ জন। এর মধ্যে সবশেষ গতকাল সোমবার রাতের বিভিন্ন সময়ে ১১ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে সারা দেশে ২২ ব্যক্তি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ২১ দিনে ২৭ ব্যক্তি তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মানবাধিকার কমিশনের উদ্বেগ
আজ মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২২ মে ২০১৮ তারিখ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয় এবং এতে ৯ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকে সমর্থন করে না এবং উক্ত ঘটনায় কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’
কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘মাদক একটি মরণ নেশা এবং জাতীয় শত্রু। জাতিকে সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপহার দেওয়ার জন্য দেশকে মাদকমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই। মাদকের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সরকারের পাশাপাশি সকলকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে এবং মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাই মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার ও দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি লক্ষ্য রেখে এ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। এ অভিযানে নিরপরাধ কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।’