ক্রসফায়ার অপরাধ দমনের মানদণ্ড হতে পারে না : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গুম, খুন ও বিচারবর্হিভূত হত্যার মাধ্যমে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়। বেআইনি মৃত্যুদণ্ড অপরাধ দমনের মানদণ্ড হতে পারে না। বেআইনিভাবে মানুষ হত্যার অধিকার কারো নেই।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিচারবর্হিভূত হত্যার নামে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানুষ হত্যা প্রাত্যহিক কৃত্যে পরিণত হয়েছে। যা মানবধিকারের পরিপন্থী ও আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। মানবধিকারের এ রক্তাক্ত মূর্তি দেশবাসীর মধ্যে ভয়ের শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারি প্রশাসনের মানবতার অধঃপতন আরো নিচের দিকে নামছে।’
গত রাতেও ১০ জনকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করেছিলাম এর পিছনে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সেটি এখন ফুটে ওঠতে শুরু করেছে। আসলে মাদক নির্মূলের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার যে হিড়িক চলছে এর গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হচ্ছে মাদকবিরোধীদের নির্মূল করতে গিয়ে টার্গেট করে বিরোধী দলের তরুণ নেতাকর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে মেরে ফেলা। গত রাতে নেত্রকোনায় কথিত ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে ছাত্রদলের সদস্য আমজাদ হোসেনকে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আতঙ্ক তৈরি করাই সরকারের উদ্দেশ্য। সুষ্ঠু নির্বাচনের সুখবর আওয়ামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে নেই। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে মানুষকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার নতুন প্রকল্প।
রিজভী অভিযোগ করেন, রমজান মাসে খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে জনজীবনে নাভিশ্বাস এবং আইনশৃঙ্খলার করুণ পরিণতিতে দেশের বেহাল অবস্থা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই সরকার ক্রসফায়াররের এ পথ বেছে নিয়েছে কি না সে প্রশ্নই জনমনে উঁকি দিয়েছে। আমরা মাদকবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে নই। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করুন, আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করুন, আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন। দেশের প্রচলিত আইনেই তো মাদক প্রতিরোধ সম্ভব। কিন্তু তা না করে সারা দেশে বন্দুকের অপব্যবহারে মানুষ হত্যা কোনো সভ্য সমাজের কাম্য হতে পারে না। আবার মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কাদের ধরা হচ্ছে, মাদকের গডফাদারদের নয়, চুনোপুঁটিদের।’