মাছের বরফ ইফতারে!
‘বরফ নিবেন মামা বরফ, বসুন্ধরা সিটির বরফ। একবারে ফুটানো পানিতে বরফ’-বলে ডাকছিল আট বছর বয়সী এক শিশু।
আজ রোববার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির পেছনে গেটে এমন আরো বেশ কয়েকজন শিশুকে পলিথিনে করে বরফের টুকরো বিক্রি করতে দেখা যায়।
গরমের দিনগুলোতে বিশেষ করে এই রমজান মাসে রাজধানীর অনেক দোকানদার এবং মেসে থাকা লোকজন এই বরফ কিনে থাকে। আবার কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রাস্তায় যাদের ইফতার করতে হয় তারাও ভরসা করে এই বরফ কিনে খায়। কেননা, সারাদিন রোজা রেখে একটু ঠান্ডা পানি তো খেতে হবে।
কিন্তু কী খাচ্ছে তারা? কোথা থেকে আসছে এই বরফ?
ভয়ঙ্কর তথ্য হলো-বসুন্ধরা সিটির কথা বলে বিক্রি করা হলেও বাস্তবে এই বরফগুলো কাঁচাবাজারের মাছ সংরক্ষণে ব্যবহার করা হয়। বাজারের কাজ শেষে সেগুলোকে পানীয় হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
নয়ন নামের এক শিশু বলে, ‘এ বরফগুলো ফুটানো পানি দিয়ে বানানো। এগুলো বসুন্ধরা সিটি থেকে এনেছি।’
তবে, বসুন্ধরা সিটি থেকে কীভাবে বরফ আনল বা সেখানে কি বরফ বানায়- এমন প্রশ্ন করলে শিশুটি এড়িয়ে যায়।
মিজান নামে আরেক শিশু বলে, বিকেলে মাছের বাজার থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে এ বরফ এনেছে। পরে সেগুলো ভেঙে পলিথিনে করে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বিক্রি করে। রমজান মাস এলে আগে তার বাবা বরফ বিক্রি করত। এখন বাবা অসুস্থ হওয়ায় সে বিক্রি করছে। এ বরফ বসুন্ধরা সিটির অনেক দোকানদার ও পাশের ব্যাচেলররা কিনে নিয়ে যায়।
বরফ কিনছিলেন আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। বললেন, ‘ইফতারের সময় একটু ঠান্ডা শরবত বানাতে এ বরফ কিনি। বাসায় ফ্রিজ নেই বলে বরফ কিনে খেতে হয়। তবে এ বরফগুলো কিসের বা কোথা থেকে আসে তা জানি না।’
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আবু হাসনাত বলেন, ‘রাস্তার বরফ দিয়ে শরবত খেলে ডায়রিয়াসহ পেটের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। এ বরফের পানি ভালো নয়। সরাসরি ময়লা পানি থেকে অস্বাস্থ্যকরভাবে এ বরফ বানানো হয়। তাই ইফতারের সময় এ ধরনের বরফ না নেওয়াই ভালো।’