খুলনায় সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে : কাদের
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি ফলাফল যা-ই হোক না কেন, তাঁর দল মেনে নেবে বলেও জানান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে খুলনা সিটির ভোট নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি কাঁচপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি নিজেও যানজটের শিকার হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুলনায় সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে বলেই খবর পাচ্ছি। এখানে জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। ফলাফল যা-ই হোক না কেন, আওয়ামী লীগ তা মেনে নেবে। আমি বিএনপিকেও একই আহ্বান জানাব।
বিএনপি খুলনা থেকে এবং ঢাকায় বসে নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ঢাকায় বসে নানা অপ্রাসঙ্গিক ও গুজব ছাড়াচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।’
মহাসড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট অব্যাহত থাকায় সেতুমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঈদের আগে যানজট নিরসন করা হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘বয়সের কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। সরকার তাঁর জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’
আজ সকাল ৮টা থেকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকাল পৌনে ৯টার দিকে খুলনা নগরীর রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, ভোট শুরুর আগে অনেক কেন্দ্রে তাঁর এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ভোট শুরুর পর ২৫-৩০টি কেন্দ্র থেকে তাঁর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসব অভিযোগে ব্যাপারে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুছ আলী দুপুর ১২টার দিকে মোবাইলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দু-একটি ভোটকেন্দ্রে গোলযোগের খবর পেয়েছি। তবে সার্বিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে।’
একই কথা বলেছেন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির। বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘আমরা লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি, তবে আমরা শুনেছি। শোনার পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, দু-একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি এবং ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হয়ে লড়াই করছেন তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, এটা বিএনপির স্বভাব। হারলে বলে কারচুপি হয়েছে। জিতলে বলে জনঘনের বিজয় হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরা হলেন, আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (নৌকা), বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির এস এম শফিকুর রহমান (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাতপাখা) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।
খুলনা সিটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি।
প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার রয়েছে চার হাজার ৯৭২ জন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ হোসেন জানান, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হচ্ছে। নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২০৬ নম্বর কেন্দ্র ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩৯ নম্বর কেন্দ্রে মোট ১০টি ইভিএম রয়েছে।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ১৪টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে একটি কেন্দ্র হচ্ছে পিটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে পাঁচটি বুথ রয়েছে। এখানে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হচ্ছে। এই কেন্দ্রে পুরুষদের বুথে মোট ভোটার এক হাজার ৫৯৩ জন।