ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শেষ মুহূর্তে আলোচনায় যারা
আর অল্প কিছু ঘণ্টা পরই বাজবে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিদায়ী ঘণ্টা। আসবে নতুন নেতৃত্ব। আগামী দিনে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে আসতে শেষ সময়ে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন বেশ কিছু নেতাকর্মী।
তবে অন্যবারের মতো এবার সিন্ডিকেটের আশীর্বাদে নেতা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বলে দিয়েছেন পারিবারিক, রাজনৈতিক ও মেধার বিবেচনায় গঠন করা হবে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব।
দুই বছর ৯ মাস পর আগামীকাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে হওয়া সম্মেলনে সাইফুর রহমান সোহাগকে সভাপতি এবং এস এম জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়।
গত ৮ মে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, নেতা নির্বাচন যেভাবে হওয়ার সেভাবেই হবে। এরই মধ্যে কে কে প্রার্থী তাঁদের তালিকা নেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি আছে। তালিকায় আসা আগ্রহীদের ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। সমঝোতা হলে এই কমিটির প্রেস রিলিজ দেওয়া হবে। এতে সফল না হলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে ভোট হবে বলে জানান তিনি। তবে ভোটে ঝামেলার কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভোটের পদ্ধতি চালু হয়। তারপর থেকেই ‘সিন্ডিকেটের’ প্রভাব বরাবরই আসছে আলোচনায়। তবে এবার আর ‘সিন্ডিকেট’ থাকছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গত ২৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের কারো ব্যক্তিগত কিংবা গোষ্ঠীগত স্বার্থ সিদ্ধিতে ছাত্রলীগ যেন ব্যবহৃত না হয় সেই নির্দেশনা দেন।
এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতার জন্য ৩২৫টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদের জন্য ১২৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ২০০ জন ফরম তুলেছেন।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে শেষ মুহূর্তে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের বেশকিছু নেতা। যাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির পতাকা। ছাত্রলীগের আগামী দিনের নেতৃত্ব যাঁদের হাতে আসতে পারে এমনকিছু নেতার নাম এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজন, সহসভাপতি রুহুল আমিন, আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাগর হোসেন সোহাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, প্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাবু, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ আরিফিন, সদস্য রেজুয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, আইন বিষয়ক উপসম্পাদক হোসাইন সাদ্দাম, স্কুলছাত্র বিষয়ক উপসম্পাদক সৈয়দ আরাফাত, উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান ইমরান, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, স্কুলছাত্র বিষয়ক উপসম্পাদক খাজা খায়ের সুজন, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম হাবিবুল্লা বিপ্লব, সহসম্পাদক খাদিমুল বাসার জয়।
এ ছাড়া আলোচনায় আছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন প্রিন্স, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বুলবুল, স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক রানা হামিদ, দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা।
আগামী দিনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এলে কেমন কাজ করবেন জানতে চাইলে বর্তমান কমিটির উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাগর হোসেন সোহাগ বলেন, ‘আমার প্রথম কাজ হবে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তনায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যেসব পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা।’
ঢাবির সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মাদ জিতু বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে ছাত্রলীগ করি। যেহেতু ছাত্রলীগ একটি ছাত্র সংগঠন, তাই ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’
জিতু বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পেলে ছাত্রলীগকে আরো গতিশীল করব। শিক্ষাঙ্গণগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করব যাতে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ভেতর লালন করা সহজ হয়।’