‘খালেদা জিয়ার রোগ সহনীয়, জামিন দেওয়া ঠিক হবে না’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার এসব অসুস্থতা তো সহনীয়। কোনো সিরিয়াস কিছুই না। এসব রোগতো আগে থেকেই ছিল। উনি এসব অসুস্থতা নিয়েই রাজনীতি করেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও উনার এসব রোগ ছিল। সুতরাং এসব অসুস্থতার জন্য জামিন দেওয়া ঠিক হবে না।’
আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এসব কথা বলেন।
আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পর একে একে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শুনানি করেন। পরে বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
সব শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুনানি শেষ হয়। তাঁর বক্তব্যের সময় আদালতে প্রচণ্ড হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে চলে যেতে চান। পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবশ্য এর আগে জয়নুল আবেদীনের বক্তব্য উপস্থাপনের সময়ও উত্তেজনা দেখা দেয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্যের বিষয়ে যুক্তিখণ্ডন করে বক্তব্য শুরু করেন। এ সময় তিনি মামলার জামিন শুনানি নিয়ে কথা না বলে আপিল শুনানি এবং মামলার মূল নথি প্রসঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। তখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করছেন।’
এ নিয়ে আদালত কক্ষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হৈ চৈ শুরু করেন। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আসন ছেড়ে যেতে চান। তিনি বলতে থাকেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আমি কোর্ট চালাতে পারব না।’
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে পেছন থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা চিৎকার করে সবাই বলতে থাকেন, ‘আপনি বসেন। আপনি বলতে পারেন না…।’
একপর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সব ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদালত কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন। প্রধান বিচারপতিও এজলাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হন। প্রায় পাঁচ মিনিট আদালতের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এ সময় ডায়াসে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি করার জন্য অনুরোধ করেন। পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সহায়তায় পরিবেশ শান্ত হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আবার শুনানি শুরু করেন।
দুপুর সোয়া ১টার দিকে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আপিলের রায়ের জন্য আগামী ১৫ মে দিন ধার্য করে কার্যক্রম মুলতবি করেন।