পাহাড়ে হরতাল ‘স্থগিত’
পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে আজ সোমবার সকাল ৬টায় ‘যানবাহনশূন্য’ অবস্থায় শুরু হয় ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। দুপুর ১২টা বাজতে না বাজতেই খেই হারিয়ে ফেলেন পিকেটাররা। এরপর সড়কে ব্যাপক যানবাহন চলাচলের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে জনজীবন। তারও তিন ঘণ্টা পর খোদ হরতাল আহ্বানকারীরাই হরতাল স্থগিত করার ঘোষণা দেন। ৪৮ ঘণ্টার হরতাল থমকে যায় নয় ঘণ্টাতেই।
হরতাল আহ্বানকারী দুই সংগঠনের অন্যতম পার্বত্য নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলা আহ্বায়ক নূরজাহান বেগম হরতাল স্থগিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, সকাল থেকে স্থানীয় প্রশাসন তাদের কর্মীদের ব্যাপক চাপে রাখার কারণে পিকেটিং করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে, তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল আপাতত স্থগিত করা হলো। মাইক্রোবাস চালক সজীব হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারসহ তাদের দাবি না মানলে আবার হরতাল পালিত হবে।
এর আগে জেএসএস-ইউপিডিএফসহ পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর সশস্ত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ১৬ এপ্রিল মহালছড়ি থেকে অপহৃত তিন বাঙালির মুক্তি এবং ৪ মে রাঙামাটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মাইক্রোবাস চালক সজীবের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদের ডাকে সোমবার সকাল থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন শুরু হয়। হরতালের সমর্থনে রাঙামাটি শহরের মানিকছড়ি এলাকায় পিকেটিং করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে হরতালে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দিতেও দেখা গেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া জানিয়েছেন, হরতালের কারণে সকাল থেকে কোথাও পিকেটিং কিংবা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা লক্ষ করা যায়নি। জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছিল।
গত ৪ মে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা, মাইক্রোবাস চালক মো. সজীবসহ পাঁচজন নিহত হন। এতে আরো আটজন আহত হন।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি এলাকায় কাঠ কিনতে গিয়ে অপহৃত হন মাটিরাঙ্গা উপজেলার পিকআপভ্যান চালক বাহার মিয়া, কাঠ ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন ও মহরম আলী। তাদের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি।