‘বাড়ি বিক্রির টাকা এসকে সিনহাকে পে-অর্ডার করা হয়’
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার উত্তরার বাড়ি বিক্রির চার কোটি টাকাই পে-অর্ডারের মাধ্যমে তাঁকে পরিশোধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দুই ব্যবসায়ী। আর এসব টাকা ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা এসব কথা বলেছেন বলে জানান তাঁদের আইনজীবী আফাজ মাহমুদ রুবেল এবং নাজমুল আলম।
আইনজীবীরা বলেন, এস কে সিনহার উত্তরার ৬ তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরু দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্ত্রী রায় ৬ কোটি টাকায় কেনেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি দুই কোটি টাকা পরিশোধ করেছিলেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্ত্রী রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা। অন্যদিকে শাহজাহান রনজিতের বন্ধু।
বাড়ি কিনতে বাকি চার কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে নিরঞ্জন ও শাহজাহান দুই কোটি টাকা করে মোট চার কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্ত্রী রায় জামিনদার হন। জামিনদার হিসেবে টাঙ্গাইল ও ঢাকার আশপাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন শান্ত্রী।
আইনজীবীদের দাবি, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালি ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে চার কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পে-অর্ডারের পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্ত্রি রায়কে বুঝিয়ে দেন।
দুই ব্যবসায়ীকে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ওই দুই ব্যবসায়ীর ঢাকার উত্তরায় দুই ব্যবসায়ীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং টাঙ্গাইলের স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ পাঠানোহয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে দুই কোটি টাকা করে মোট চার কোটি টাকা শাহজাহান ও নিরঞ্জন ঋণ নেন। এরপর একই বছরের ১৬ নভেম্বর সেই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করেন। ওই বিষয়ে সম্প্রতি দুদকে আসা এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তা যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।