নির্বাচন কারো ছেলেমেয়ের বিয়ে নয় : খসরু
জাতীয় নির্বাচন কারো মেয়ের বিয়ে বা ছেলের বিয়ে নয় বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের আয়োজিত যুব সমাবেশে খসরু এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘নির্বাচন কি কারো মেয়ের বিয়ে যে আপনারা কাউকে আমন্ত্রণ জানাবেন আর কাউকে জানাবেন না। এটা কি সরকারের পারিবারিক অনুষ্ঠান? এটা ১৬ কোটি মানুষের অনুষ্ঠান। তারা নির্ধারণ করবে এই অনুষ্ঠান কীভাবে হবে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক মানুষ আশা করে, ভোটের মাধ্যমে একটা প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার হবে। কিন্তু মানুষের আশা থাকলেও ভোটের মাধ্যমে যে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার হবে, তা কেউ বিশ্বাস করে না। কারণ, আজ বাংলাদেশে নির্বাচনের জায়গা নেই। একটা নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে। তারা সরকারের কথা ছাড়া কোনো কাজ করে না। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু তারা সেটার ব্যবহার করছে না। তাঁরা নির্বাচন করার জন্য একটা বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি করে দিয়েছেন। এই নির্বাচন কমিশনের কোনো আত্মসম্মান জ্ঞান নেই। নিজেদের কাজের মধ্যে বাইরের একটা শক্তি যোগ করেছে।’
খসরু বলেন, ‘একটা পকেট মার যখন পকেট মারতে আসে, তখন তার সঙ্গে অনেক লোক থাকে। তারা সবাই নিজেদের কাজ করে, মানুষদের ব্যস্ত রাখে। এর মধ্যে পকেটমার মানুষের পকেট মেরে চলে যায়। তেমন নির্বাচন কমিশন ১৬ কোটি মানুষের পকেট মারছে। তাদের সঙ্গে আছে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন), আদালত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) প্রয়োজন। এখনো কিন্তু সেটা অনুপস্থিত। কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নয়, একটি দলকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখলের নীলনকশা দেখছি আমি। সব মিলিয়ে দিনের শেষে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনের পথ দেখছি না।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে অবশ্য আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে হবে। কারণ ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে আর ফিরে আসবে না। বিএনপি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। এই সংকটে বিএনপি বারবার আলোচনার ডাক দিয়েছে। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। কারণ, এ সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। আগামী নির্বাচন খালেদা জিয়াকে ছাড়া হবে না, এটাই শেষ কথা। তাঁকে মুক্তি দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, পৃথিবীর সব দেশে দ্রব্যমূল্য কমছে। আর বাংলাদেশে বাড়ছে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমি নির্বাচনী প্রচারণার জন্য খুলনায় গিয়েছিলাম। সেখানে হোটেলে রাতে ঘুমিয়েছিলাম। এমন সময় হোটেল ম্যানেজারকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ফোন করে বলা হয়েছে, আমার রুমে কে কে ঘুমাচ্ছে, সেটা জেনে আসতে। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাত ১১টার পর কোনো গেস্টকে জাগানোর নিয়ম নেই। তখন বলে উনার ফোন রাত ২টায়ও খোলা কেন, এটা জেনে আসেন। তাদের নজরদারি এই পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ।