নওগাঁয় সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সভা ও কর্মবিরতি
নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মুনির আলী আকন্দের অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেছেন নওগাঁয় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে ডিবিসি নিউজের নওগাঁ প্রতিনিধি নাজমুল হুদার মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে শহরের মুক্তির মোড়ে নওগাঁয় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তাঁরা তাঁদের ক্যামেরা, ট্রাইপড, কলম, প্যাড ইত্যাদি উপকরণ রেখে অবস্থান গ্রহণ করেন।
প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক ছাড়াও কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তাৎক্ষণিকভাবে বক্তব্য দেন বাসদ নওগাঁ জেলার সমন্বয়ক জয়নুল আবেদীন মুকুল, বিশিষ্ট নাগরিক মোস্তাক হাসান গুল্ট প্রমুখ। প্রতিবাদ সভা ও প্রতীকী কর্মবিরতিতে নেতৃত্ব দেন নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কায়েস উদ্দিন।
সাংবাদিকরা তাঁদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম ও আরএমও ডা. মুনির আলী আকন্দকে বদলি, নওগাঁ হাসাপাতালকে জেলার প্রায় ৩২ লাখ মানুষের চিকিৎসা উপযোগী করে তোলা এবং চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মানসিকতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
প্রতিবাদ সভা ও প্রতীকী কর্মবিরতি চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেন জুয়েল, এনটিভির নওগাঁ প্রতিনিধি আসাদুর রহমান জয়, দৈনিক করতোয়া প্রতিনিধি নবির উদ্দিন, ইনকিলাব প্রতিনিধি এমদাদুল হক সুমন, দৈনিক ভোরের ডাক প্রতিনিধি মো. শাহজাহান আলী, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন প্রতিনিধি মো. সাদেকুল ইসলাম, এটিএন বাংলা প্রতিনিধি এ এস এম রাইহান আলম, সময় টেলিভিশন প্রতিনিধি এম আর রকি, বাংলাভিশন প্রতিনিধি বেলায়েত হোসেন, যমুনা টেলিভিশন প্রতিনিধি শফিক ছোটন, চ্যানেল ২৪-এর প্রতিনিধি হারুন-অর-রশিদ চৌধুরী রানা এবং দৈনিক খোলা কাগজ প্রতিনিধি খন্দকার আব্দুর রউফ পাভেল।
প্রতিবাদ সভা থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আরএমওর অপসারণের জন্য প্রশাসনকে সাতদিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। অন্যথায় নওগাঁয় বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও সাংবাদিকরা জানান।
গত ১৩ এপ্রিল শুক্রবার পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ডিবিসি নিউজের নওগাঁ প্রতিনিধি নাজমুল হুদা অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকা ও দায়িত্বরতদের চরম অবহেলায় চিকিৎসা বঞ্চিত হন নাজমুল। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাংবাদিক নাজমুল হুদাকে চিকিৎসা না দিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে দায়িত্ব শেষ করেন। পরে বগুড়া নেওয়ার সময় পথে মারা যান নাজমুল হুদা। এরপর থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আরএমওর অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন নওগাঁয় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কর্মরত সাংবাদিকরা।