খুলনা সিটি ভোট : উন্নয়নের বার্তা দুই প্রার্থীর
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার টানা পঞ্চম দিন আজ শনিবার। পাঁচ মেয়র পদপ্রার্থীই প্রচারণা চালাচ্ছেন জোরেশোরে। তবে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক আর নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রচারণায় কোনো ছন্দপতন হয়নি।
আজ শনিবার সকাল ৮টায় নগরীর মুন্সীপাড়ায় নিজ বাসভবনে প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে তালুকদার আবদুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এর আগে পাঁচ বছর মেয়র ছিলেন, তখন যে উন্নয়ন করেছেন তা দৃশ্যমান। তাই খুলনার ভোটাররা তাঁকেই ভোট দেবে। পরে তালুকদার আবদুল খালেক খালিশপুর গোয়ালখালী এলাকা দিয়ে তাঁর গণসংযোগ শুরু করেন।
নিজের বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তালুকদার খালেক এনটিভিকে বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছি জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত সাড়া পাচ্ছি। আমি আগেও ৫ বছর মেয়র হিসেবে নগরবাসীর সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা মানুষ দেখেছে। আমার সময়ের করা সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পই ছিল দৃশ্যমান। মানুষ এর সুবিধা ভোগ করেছে। এবারও আমি যার কাছেই যাই সবার একই বক্তব্য, আমরা যে উন্নয়ন চাই তা আপনার মাধ্যমেই সম্ভব।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ মেয়র পদপ্রার্থী বলেন, সাত-আট বছর ধরে বিএনপির মেয়র দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কী উন্নয়ন করেছেন তা জনগণ দেখেছে। নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করা, মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করা, যানজট দূর করা, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা—এগুলোই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে।
২০ দলীয় জোটের মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু সকাল ৯টায় বৈকালী থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এই সময় তিনি বলেন, তালুকদার আবদুল খালেক ব্যক্তিগতভাবে উন্নয়ন করেছেন। তার পকেট ভারী করেছেন। খুলনার দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। তিনি বলেন, ভোট যত এগিয়ে আসছে ভোটরেদের আতংক আশংকা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভোট দেওয়ার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনের। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা ৯ দফা পেশ করেছি। এর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন প্রথমে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও সরকারি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রয়োজন নেই বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে সর্বত্র।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে মঞ্জু বলেন, ‘গতকালও সরকারদলীয় প্রার্থীর লোকেরা আমার দুটি মাইক ভেঙে নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিয়েছে। পোস্টার লাগানোর সময় আমার কর্মীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। নারী কর্মীরা প্রচারণা চালানোর সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিচ্ছে। নির্বাচন অফিসে আমরা এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়েও পাইনি। কাজেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো বিকল্প নেই।’
নগরীর উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী বলেন, ‘আমি গত তিনদিন হলো নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা করেছি। একটি আধুনিক নগর গড়ে তোলার জন্য সব ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম আমি হাতে নেব। এটির জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছি। জলাবদ্ধতা দূর করা, মশক নিধন, যানজট দূর করাসহ আধুনিক পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তুলে ভোটারদে স্বপ্ন পূরণই আমার একমাত্র ব্রত।’
দুই প্রার্থীই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলছেন অবিরাম। সঙ্গ দিচ্ছে দলের নেতাকর্মীরা। দুপুরে সুশানের জন্য নাগরিক (সুজন) পাঁচ মেয়র পদপ্রার্থীকে নিয়ে মুখোমুখি অনুষ্ঠান করার কথা রয়েছে।