‘আমাকে বাঁচাও, দালালরা সৌদিতে বিক্রি করে দিয়েছে’
রাজধানীতে রিকশা চালান মৌসুমি আক্তারের স্বামী মো. ফারুক। মানিক (১১) ও শাকিব (৩) নামের দুই ছেলে আছে তাঁদের। থাকতেন একটি বস্তিতে। অভাব-অনটনের সংসারে একটু সুখের আশায় গত জুন মাসে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যান মৌসুমি। এই আনন্দ যে বেদনায় রূপ নেবে, সেটা কি পরিবারের কেউ জানত?
গত বছরের ২০ জুন ‘মাস প্রপার্টিজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন মৌসুমি। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ টাকা চাওয়া হয়। এরপর মৌসুমি জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা দেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে যান তিনি।
সৌদি আরবে গিয়ে মৌসুমি পরিবারের সঙ্গে কোনোভাবেই আর যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। দীর্ঘদিন যোগাযোগ না করায় তাঁর পরিবারের সদস্যরা চিন্তায় পড়ে যান। একপর্যায়ে মৌসুমির স্বামী ফারুক মাস প্রপার্টিজে যান। স্ত্রীর খবর জানতে চান। তাঁরা ফারুককে বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হলে আরো ৫০ হাজার টাকা লাগবে, অন্যথায় তাঁকে মেরে ফেলা হবে।
এরপর ফারুক বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ১৬ এপ্রিল মৌসুমি হঠাৎ করে স্বামীর মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেন, ‘তুমি আমাকে বাঁচাও, দালালরা আমাকে সৌদি আরবে বিক্রি করে দিয়েছে। নানা অসামাজিক কাজ করতে আমাকে বাধ্য করা হচ্ছে।’
এ ঘটনায় গত ১৮ এপ্রিল ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ ফারুক মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে পল্টন থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
ওই মামলায় ‘দালাল’ রাজিয়া, মো. রাজ্জাক, মোশারফ, মাস প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পারভেজকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকার লিগ্যাল এইড অফিসার রাজেশ চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ফারুকের বক্তব্য শুনে জেলা লিগ্যাল এইড থেকে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে জেলা লিগ্যাল এইড সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।
এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী মো. জাকির হোসাইন বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পল্টন থানায় পাঠানো হয়েছে।