তুরাগ বাসে যৌন হয়রানি, ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে ১৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার বিকেল ৫টায় উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের সামনে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় পারভেজ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বক্তব্য দেন ও দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।
পারভেজ জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেপ্তারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের কাছে ও পরিবহন মালিকপক্ষের কাছে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সুনির্দিষ্ট পরিচয়পত্র থাকতে হবে, যাতে করে যেকোনো অপরাধে তাদের দ্রুতই শনাক্ত করা যায়। মাদকের সঙ্গে জড়িত কোনো মালিক, ড্রাইভার হেলপার, কর্মকর্তা-কর্মচারী যেন পরিবহন ও পরিবহন সমিতির কোনো কাজে যুক্ত থাকতে না পারে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। পরবর্তীতে যেন এই রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা না ঘটে সেই নিশ্চয়তা আমাদের সঙ্গে বসে মালিকপক্ষকে লিখিত অঙ্গীকারনামার মাধ্যমে দিতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায়ভার মালিকপক্ষকে নিতে হবে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে দাবি হলো- ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি যেন রাস্তায় চলাচল করতে না পারে তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পারভেজ আরো বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয় তাহলে দুপুর ১টা থেকে মানববন্ধন চলবে।’ আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বলছে গাড়ি শনাক্ত হয়েছে। পুলিশ ইচ্ছা করলেই তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কিছুই এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।’
তুরাগ বাসের মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রসঙ্গে পারভেজ বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মালিক কর্তৃপক্ষ বসেছিল। তারা বলেছিল, অভিযুক্ত বাসকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কিছুই করেনি।’
জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল রাজধানীর বাড্ডার নর্দ্দা এলাকায় তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে উত্তরা ইউনিভার্সিটির একজন শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হন। পরবর্তীতে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে নেমে নিজেকে রক্ষা করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর স্বামী বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। যদিও ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।’