নারী ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি দারিদ্র, বৈষম্য ও সংঘাতমুক্ত সমাজ গঠনের ভিত্তি প্রস্তর হিসেবে বৈশ্বিক শান্তি ও নারীর ক্ষমতায়নের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য কমনওয়েলথ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাদের যথাযথ শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘যথাযথ শিক্ষা ছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি বিশ্ব দেখতে চাই, যেখানে মানবিক উন্নয়ন অজর্নে নারী ও পুরুষ হাতে হাত রেখে কাজ করে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ওয়েস্টমিনিস্টারে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘নারীর ক্ষমতায়ন; কমনওয়েলথ সদস্য দেশসমূহের মেয়েদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা’ শীর্ষক কমনওয়েলথ নারী ফোরামের এক অধিবেশনে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি জাতি হিসাবে পথ চলায় নারীদেরকে আমাদের সমান অংশীদার ভাবতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে লিঙ্গ সমতা ও অবৈষম্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধানে নারীর অগ্রগতির জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা রাখারও বিধান রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারীর আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর লিঙ্গ সমতার জন্য বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে সফলতার ক্ষেত্রে ১৪৪টি দেশের মধ্যে ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম।’
প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ গৃহীত কর্মসূচির উল্লেখ করে বলেন, ‘নারী শিক্ষার প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের লেখাপড়া বিনা বেতনে করা হয়েছে। ২৮ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য মিড ডে মিল কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের উল্লেখ করে বলেন, ‘এই নীতিতে নারীর অংশ গ্রহণ ও ক্ষমতায়নে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় সংসদে নারীর সংরক্ষিত আসন ৩০টি থেকে বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে। বর্তমান সংসদের ২২টির বেশি আসনে নারী এমপি সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ পার্লামেন্ট, বিশ্বের একমাত্র পার্লামেন্ট, যেখানে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা এবং সংসদে বিরোধিদলীয় নেতা সবাই নারী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে নারী শিক্ষা মেয়ে শিশুদের বিভিন্ন সামাজিক বাধা অপসারণ এবং গ্রামীণ এলাকায় নারীদের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।’