‘রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধানেও কাজ করছে সৌদি’
মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধানেও কাজ করছে সৌদি আরব। এ ছাড়া জেনেভায় ২০ মিলিয়নসহ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে এ পর্যন্ত ২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
সৌদি বাদশাহ সালমানের প্রতিনিধি হিসেবে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফের সুপারভাইজার জেনারেল ড. আব্দুল্লাহ আল রাবিয়া।
আল রাবিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সৌদি আরবে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। আমরা কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টকেও নিয়ে এসেছি। দুই মিলিয়ন ডলারে কক্সবাজার সদর হাসাপাতালের উন্নয়নসহ পাঁচ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার সঙ্গে, জেনেভায় আমরা আরো ২০ মিলিয়ন অঙ্গীকার করেছি। আমাদের পুরো মনোযোগ রয়েছে এই সংকটের দিকে। আমরা মানবিক সহায়তার সর্বোচ্চ ও স্থায়ী সুফল নিশ্চিত করতে চাই। সামনে রমজান ও বর্ষা মৌসুমের বিষয়টিও আমাদের ভাবনায় রয়েছে।’
এরই মধ্যে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গাসহ প্রায় ১১ লাখ সিরীয়, ইয়েমেনি শরণার্থীর আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে তুলে এক প্রশ্নের জবাবে ড. রাবিয়া ও সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল মুতাইরি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ও রাজনৈতিক সমাধানে যেকোনো উদ্যোগে রিয়াদের অংশগ্রহণ থাকবে।’
আল রাবিয়া বলেন, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরব একটি আঞ্চলিক শক্তি। আমরা নিরাপত্তা পরিষদ, ওআইসিসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় আছি যাতে এর রাজনৈতিক সমাধান আসে, রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে।’
সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল মুতাইরি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সৌদি আরব সবসময় আপনাদের পাশে আছে। মিয়ানমারের সংগে আপনারাও যুক্ত হয়ে কাজ করছেন, একজন মন্ত্রীও ঘুরে গেছেন। আশা করি একটা সমাধানের পথ খুলে যাবে।’
সৌদি রাষ্ট্রদূত ও এই ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা জানান, সমন্বিত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালাতে ২০১৫ সালে সৌদি বাদশাহর উদ্যোগে কিং সালমান হিউম্যানিটেরিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ-সংক্ষেপে কেএস রিলিফ গঠিত হয়, যেটি এখন বিশ্বের ৪০টিরও বেশি এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় ৩৬৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
ড. আব্দুল্লাহ আল রাবিয়া মন্ত্রীর মর্যাদায় বাদশাহ সালমানের প্রতিনিধি হিসেবে যখন মানবিক ও ত্রাণ সহায়তা দিতে বাংলাদেশে, ঠিক সেদিনই সৌদি আরবের কয়েকটি শহরে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য তীব্র নিন্দা জানায় ঢাকা। প্রায় একই সময়ে সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে সেদেশ সফর করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌদি-বাংলাদেশের সম্পর্কের এই মাত্রায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে সৌদি অঙ্গীকারের কথা জানালেন বাদশাহর প্রতিনিধি ড. আবদুল্লাহ আল রাবিয়া।