‘রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার অধিকার আছে’
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক বলেছেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ধ্বংসযজ্ঞের হোতাদের তাদের অপরাধের জন্য অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। কারণ এই নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিসিএবি) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার নিরাপদভাবে, স্বেচ্ছায়, মর্যাদার সঙ্গে ও স্থায়ীভাবে তাদের নিজ আবাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রতি তার দেশের সমর্থন ব্যক্ত করেন।
অ্যালিসন ব্লেক রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের অব্যাহত অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জাতিসংঘের হিসেবে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নৃশংসতার মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
সংলাপে ঢাকা-লন্ডন সম্পর্ক, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।
ব্লেক বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি। তবে তিনি এ কথা বলেন যে, তাঁর দেশ অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাসী।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করব না। তাই আপনারা রাজনীতি ও নির্বাচনী ফলাফলের ব্যাপারে আমার কাছে অনুমাননির্ভর বক্তব্য পাবেন না।’
তবে রাষ্ট্রদূত গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব বরিস জনসনের ঢাকা সফরকালে তাঁর দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি (জনসন) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মুক্ত গণমাধ্যম এবং বিরোধী দলকে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।’
অ্যালিসন ব্লেক বলেন, ‘একে অপরের কমনওয়েলথের অংশীদার হিসেবে ইউকে, ইইউ এবং অন্যদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের যে কোনো সমস্যা সমাধানে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এগিয়ে যেতে এবং সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের ব্যাপারে অব্যাহতভাবে উৎসাহিত করে যাবে।’ ব্লেক আশা প্রকাশ করেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটের প্রাক্কালে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় থাকবে। তিনি বলেন, ব্রিটেন সবসময়ই গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেয়।’
রাষ্ট্রদূত স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তরণে শর্ত পূরণ করায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।