নেত্রকোনায় ছয় মাস পর দম্পতি হত্যার রহস্য উন্মোচন
নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে দম্পতি খুনের প্রায় ছয় মাস পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বাসা থেকে টাকা চুরি করতে গিয়ে তাঁদের হত্যা করে এলাকার ছয় ভবঘুরে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে গতকাল রোববার গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। ওই পাঁচজন আজ সোমবার বিকেলে নেত্রকোনার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ময়মনসিংহে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলো নেত্রকোনার শহরের সাতপাই এলাকার রাসেল মিয়া (২১), পলাশ মিয়া (২২), রুবেল মিয়া (২১) ও পলাশ (২২) এবং পারলা এলাকার আতিকুল ইসলাম (১৯)। এর মধ্যে রাসেলের বাসা থেকে দুটি সোনার বালা উদ্ধার করেছে পিবিআই।
নেত্রকোনা দম্পতিকে হত্যার অভিযোগে ছয় মাস পর গ্রেপ্তার পাঁচজনের তিনজন। ছবি : এনটিভি
পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবুল কাশেম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা ভবঘুরে টাইপের। সাধারণত কোনো কাজ-কর্ম করে না। মাছ ধরতে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের জন্য আসামিরা ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকায় বাবলু সরণি সড়কে মিহির কান্তি বিশ্বাস (৭০) ও তুলিকা রানী চন্দ ওরফে সবিতার (৫৮) বাড়িতে যান। তখন সবিতা তাদের ভালোভাবে গাছের ডাল ভেঙে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করতে বলেন। গাছের ডাল পরিষ্কারের জন্য তিনি তাঁদের ১০০ টাকা দেন। তখন সবিতার ব্যাগে অনেক টাকা দেখে ফেলেন আসামিরা। পরে এলাকার একটি পুকুরের পাড়ে বসে আসামিরা ওই সব টাকা চুরির পরিকল্পনা করে। এর দুদিন পর ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় তারা সবিতাদের বাসায় যায়। আলমারি খোলার সময় সবিতার স্বামী মিহির তাদের দেখে ফেলেন। তখন আসামিরা বালিশ চাপা দিয়ে মিহিরকে হত্যা করে। মিহিরের গোঙানি শুনে এগিয়ে আসেন সবিতা। আসামিরা তাঁকেও জাপটে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। জোড়া হত্যা শেষে আসামিরা বাড়িতে থাকা সব টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
এর তিনদিন পর ১৩ অক্টোবর দুপুরে মিহির কান্তি বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী সবিতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মিহির নেত্রকোনা সদর উপজেলার কৃষ্ণ গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। সবিতা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের মাঠকর্মীর দায়িত্বে ছিলেন।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবুল কাশেম জানান, পিবিআই গতকাল রোববার আসামিদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে। আজ সোমবার বিকেলে আদালতে হাজির করলে আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।