দিনদুপুরে পাসপোর্ট কর্মকর্তাকে কোপাল দুর্বৃত্তরা
বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) সাহজাহান কবিরকে দিনদুপুরে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের কৈগাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাহজাহানকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনাস্থলের পাশের বন বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাহজাহান কবির দুপুরে রিকশায় করে তাঁর শহরতলির শাকপালার বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় কৈগাড়ি এলাকায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত তাঁর রিকশার গতিরোধ করে।
এর পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাহজাহানকে রামদা দিয়ে ডান পায়ে কোপ দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় সাহজাহান রিকশা থেকে নেমে দৌড়ে বন বিভাগের কার্যালয়ের ভেতরে একটি কক্ষে ঢুকে দরজা আটকে দেন। দুর্বৃত্তরা ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তাঁকে বের করে কুপিয়ে রেখে যায়।
এ সময় বন বিভাগের কর্মচারীরা পাশের মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন। এরপর মসজিদ থেকে লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তখন সাহজাহানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, সাহজাহান কবিরের ডান পায়ের হাঁটু, ডান হাত এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর মধ্যে হাঁটু ও হাতের জখম গুরুতর।
বিকেল ৫টায় সাহজাহানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পাঠানো হয় বলে জানান ওই চিকিৎসক।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ মণ্ডল বলেন, গত মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকজন যুবক পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে সাহজাহান কবিরকে হুমকি দিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। যুবকরা সাজাহানকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে দিতে হুমকি দিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, সাহজাহান কবির ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে যোগদান করেন। এর পর থেকে তিনি কার্যালয় থেকে দালালদের বিতাড়িত করেন। পাসপোর্ট কার্যালয়ে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়। এসব কারণে পাসপোর্ট কার্যালয়ে কিছু কর্মচারী ও দালাল ক্ষুব্ধ ছিল। আর এ ক্ষোভ থেকে হামলা করা হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, পাসপোর্ট কার্যালয় দালালমুক্ত করার কারণে দালালরা সংঘবদ্ধ হয়ে সাহজাহান কবিরের ওপর হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
গতকাল রাতে পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী শাজেনুর আলম বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হাসান, জীবন, রাসেল ও মিলুকে আটক করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।