বুড়িগঙ্গা থেকে বিনোদন কেন্দ্র উচ্ছেদে হাইকোর্টের রায় বহাল
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙ্গা নদীতে স্থাপিত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিনোদন কেন্দ্র আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ বিআইডব্লিউটিএর আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকী।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মনজিল মোরসেদ। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মফিজুর রহমান।
২০১০ সালের ৭ মে একটি দৈনিকে ‘বুড়িগঙ্গা নদীর উদ্ধার করা জায়গায় বিনোদন কেন্দ্র!’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করা হয়।
এ রিটের শুনানি শেষে ২০১০ সালের ২০ জুলাই হাইকোর্ট কামরাঙ্গীরচরের টাওয়ার মোড়ে বিআইডব্লিউটিএর বিনোদন কেন্দ্রের স্থাপনা ৩০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে দেন। পরে আপিল বিভাগে আপিল করে বিআইডব্লিউটিএ।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আপিল বিভাগ বিআইডব্লিউটিএর আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
দৈনিকটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বুড়িগঙ্গা নদীর দখলমুক্ত দেড় একর জায়গায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ করছে। কামরাঙ্গীরচরের টাওয়ার মোড় এলাকায় নদীর দুই তীরের মধ্যবর্তী ওই জায়গা নদী বাঁচাতে উদ্ধার করা হয়েছিল। এখন ওই জায়গা খনন করে নদীর গতিপ্রবাহে সহায়তা না করে বরং বিপরীত কাজটিই করা হচ্ছে। রাজধানীর চারদিকে ৫৯০ বর্গমাইলের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে এর নকশার অনুমোদন নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ওই বিনোদন কেন্দ্রের স্থাপনার নকশার ব্যাপারে তা নেওয়া হয়নি বলে রাজউকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।’
এতে বলা হয়, ‘রাজধানীর চারপাশের চারটি নদীতে জেলা প্রশাসন যে চার হাজার স্থাপনার তালিকা করেছে, সেখানে এই স্থাপনার নাম নেই। বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, নদীতীর থেকে দূরে কয়েক বছর আগে পানি কমে চরের মতো ওই জায়গার সৃষ্টি হয়। সোয়ারীঘাট এলাকার কামালবাগের বাসিন্দা হাফেজ কামাল ওই জায়গা ভরাট করে ১৫০টি ঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছিলেন। ওই স্থানে যাতায়াতের জন্য তাঁর একাধিক খেয়ানৌকাও ছিল। ২০০৭ সালে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিআইডব্লিউটিএ এবং ঢাকা জেলা প্রশাসন কামালের দখল থেকে জায়গাটি উদ্ধার করে।’