নরসিংদীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
নরসিংদীর পলাশ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তারা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর বিএনপির স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।
আজ সোমবার বিকেলে পলাশের জিনারদী ইউনিয়নে চরনগরদী গ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খানের নিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘোড়াশাল শহর যুবদলের সভাপতি মাহমুদুল হক মোমেন জানান, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ জিয়াউর রহমানসহ দেশ মাতৃকার পরাধীনতা ঘোচাতে আত্মদানকারী বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চরনগরদীতে আমাদের অনুষ্ঠানে হামলা চালান। তারা পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রধান পার্টি অফিসে তালা দেয়।
যুবদল নেতা আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলায় আমিসহ উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি কলি বেগম, পলাশ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রতন ও ঘোড়াশাল শহর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছানাউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হয়েছি।’
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে- এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’
উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ছাত্রলীগের তালা দেওয়ার বিষয়ে সাইদুর বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে বিএনপির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মো. রাজন বলেন, ‘বিএনপির অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। এলাকায় তাদের কোনো কর্মী-সমর্থক না থাকায় তারা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে নাটক সাজিয়েছে। আমার জানা মতে, চরনগরদীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমরা উপজেলা চত্বরে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় পার করেছি। আমার সংগঠনের সবাই সেখানে ছিলেন।’
বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা : বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর দিনে নরসিংদী জেলাধীন পলাশ থানার ওসির নেতৃত্বে এবং পুলিশের ছত্রছায়ায় ৪০/৫০ জনের একদল সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে পলাশ বিএনপির কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেওয়ার ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ফ্যাসিবাদী ও হিংসাশ্রয়ী আচরণের কারণে দেশের মানুষের কাছে ধিকৃত এবং ঘৃণিত। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে নিজেদের সম্পত্তি ভাবার কারণেই আওয়ামী লীগ আজ পলাশে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার জন্য পলাশ বিএনপি কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছে। পুলিশের নেতৃত্বে এবং ছত্রছায়ায় আওয়ামী গুন্ডাদের দ্বারা পলাশ বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রাখার অর্থই হচ্ছে-এদেশে জাতীয় কিংবা দলীয় সকল অনুষ্ঠান কেবলমাত্র আওয়ামী লীগই করবে, অন্য কেউ নয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে পলাশ বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের কর্তৃক তালা লাগানো এবং কার্যালয় ঘিরে রাখার ঘটনায় আমি তীব্র ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি করছি।’