মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল হবে একই ধরনের
শহিদ মুক্তিযোদ্ধসহ দেশের সব মুক্তিযোদ্ধার কবর বা সমাধিস্থল হবে একই আকৃতির একই ধরনের। সহজেই যাতে অন্যদের কবর বা সমাধিস্থল থেকে দেশের বীর সেনানীদের আলাদা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চিনতে পারে এবং সম্মান দেখাতে পারে এ জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত প্রকল্পগুলোর তালিকায় এ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আল-শামস, আল-বদর ও পাকিস্তানী বাহিনীর প্রতি ঘৃণা প্রকাশের জন্য ঢাকায় নির্মাণ করা হবে ঘৃণাসম্তম্ভ।
এ প্রকল্পের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ করেছেন। তাদের কারণেই আমরা একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। দেশের সব মানুষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখাত পারে এ জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
‘মুক্তিযোদ্ধকালে শহিদ ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ উন্নয়ন (১ম পর্যায়) প্রকল্প’ নামে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রথম পর্যায়ে এ প্রকল্পের অধীনে ২০ হাজার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করা হবে।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সৃষ্ট বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ (দ্বিতীয় প্রর্যায়) প্রকল্পের অধীনে ২৮১টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
ঢাকায় হবে ঘৃণাস্তম্ভ
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আল- শামস, আল-বদর ও পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতায় ঘৃণা জানাতে ঢাকায় নির্মাণ করা হবে ঘৃণাস্তম্ভ। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রকল্প নিয়েছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রের কোনো এক উপযুক্ত স্থানে এ ঘৃণাস্তম্ভটি নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে খ্যাতিমান নকশাকারদের কাছ থেকে নকশা চেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদেও একজন সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এ ঘৃণাস্তম্ভ নির্মাণের ঘোষণা দেন।
ঘৃণাস্তম্ভ প্রকল্পের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযু্দ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামসের হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতার প্রতি ঘৃণা জানাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষ এ ঘৃণাস্তম্ভ্যে গিয়ে ঘৃণা প্রকাশ করবে।