কলেজছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপ, প্রভাষক ফুপাকে যাবজ্জীবন
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপ করার দায়ে তার আপন ফুপা সাইফুল ইসলাম বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাইফুলকে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে জয়পুরহাট নারী ও শিশু ট্রাইবুনাল-২ এবং অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. আব্দুল মজিদ এ আদেশ দেন।
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন ছাত্রীর বাবা আবদুস ছালাম। তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
ছাত্রীর স্বজনরা জানান, এসিডদগ্ধ ছাত্রী জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কাথাইল গ্রামের আবদুস ছালামের মেয়ে। আসামি সাইফুল ইসলাম বাবু একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গোবিন্দগঞ্জ ইসলামপুর-পিয়ারাপুর আই জি এম স্কুল অ্যান্ড কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক। তিনি এসিডদগ্ধ ছাত্রীর আপন ফুপা হলেও ভাতিজির প্রতি আসক্ত ছিলেন। অনেকদিন ধরেই ভাতিজিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন তিনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট রাতে কালাই পৌর এলাকায় ওই ছাত্রী নিজের শোয়ার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে ফুপা সাইফুল ইসলাম বাবু তাঁর শরীরে এসিড ছুঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ছাত্রীর মুখ ও শরীর ঝলসে যায়। ছাত্রীর চিৎকার শুনে এগিয়ে আসে লোকজন। পালানোর সময় গ্রামের লোকজন সাইফুল ইসলাম বাবুকে চিনে ফেলে।
পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকায় এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ২১ আগস্ট মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম বাবুকে আসামি করে কালাই থানায় একটি মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আজ মামলার রায় দেন আদালত।