বাড়িতে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র মিললে জেল-জরিমানা
বাসাবাড়িতে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বচ্ছ ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার নগরভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এই কথা জানিয়েছেন।
মেয়র বলেন, ‘আগামী ৮ এপ্রিল বাসাবাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা করা হবে। তখন যদি কোনো বাড়িতে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া যায় বা লার্ভা পাওয়া যায়, আইনানুযায়ী সেসব ভবন মালিকের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড, কারাদণ্ড এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।’
এ সময় সাঈদ খোকন আইনের ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন, ‘প্যানাল কোর্টের ২৬৯ এবং ২৭০ এর আওতায় আমাদের দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আমরা চাই না কোনো নাগরিক কোনোক্রমে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ুক। পাশাপাশি এও চাই, কারো কোনো অবহেলার কারণে অন্য কোনো নাগরিক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত ‘মশক বাহিত রোগ প্রতিরোধ ও মশক নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় মেয়র সাঈদ খোকন নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাসাবাড়ি বা বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত টায়ার বা কন্টেইনারে স্বচ্ছ পানি জমে থাকলে পরিচ্ছন্ন রাখতে আগামীকাল থেকে সংবাদমাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে এক লাখ ৬৫ হাজার বাসাবাড়িতে সচেতনতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি পৌঁছে যাবে। প্রত্যেক বাড়ির মালিককে এই গণবিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ জারি করা হবে। নোটিশে উল্লেখ থাকবে ভবনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন, কোনোক্রমে কোনো অবস্থাতেই যেন এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র না থাকে এটা নিশ্চিত করবেন।’
নিয়মিত এই কার্যক্রম ২০ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং ৮ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে মেয়র জানান।
মতবিনিময় সভা শেষে মেয়র সাঈদ খোকন আনন্দবাজার এলাকায় আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় এলাকার যেসব দোকানমালিক ফুটপাত দখল করে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ করে রেখেছিলেন তাঁদের এগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এসব এলাকায় আবর্জনা পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাহউদ্দীন, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজা মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. দেবাশীষ সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, আইসিডিডিআরবির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুজহাত নাসরিন বানু ও সেফওয়ে পেস্ট কন্ট্রোলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মঞ্জুর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।