বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হচ্ছে জাল রুপি
বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে ভারতীয় মুদ্রা রুপির নকল। আর এই জাল রুপি পাচার করা হচ্ছে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে। জানা গেল, এক লাখ জাল রুপি বিক্রি করলে ১০ হাজার টাকা লাভ হয় একজন জাল টাকা ব্যবসায়ীর।
আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন।
এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. জসিম উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, স্বপন দত্ত ও মো. সাঈদুর রহমান। এ সময়ে তাঁদের কাছ থেকে ৩০ লাখ জাল ভারতীয় রুপি, কার্টিজ (বিশেষ কাগজ), স্কেল গ্লাস স্কিন এবং প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।
আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ুন জানিয়েছেন, তিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে জাল টাকা এবং ভারতীয় জাল রুপি তৈরি ও বিপণন করে আসছেন। জাল টাকার গুরু হিসেবে খ্যাত দুরুজ্জামানের হাত ধরেই হুমায়ুন এই পথে আসেন। জাল রুপি তৈরি ও বিপণনে গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ুনের আপন ছোট ভাই কাওছার, সাইফুল ও সাঈদুর মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। গ্রেপ্তার সাঈদুর জাল রুপি তৈরির কাগজ বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করেন। সাঈদুরের তৈরি জাল টাকার বিশেষ এই কাগজ প্রতি পিস তিন থেকে চার টাকা দরে কেনেন হুমায়ুন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘জাল টাকা তৈরি এবং বিপণন একটি টেকনিক্যাল বিষয় এবং এক্সপার্টদের কাজ। হুমায়ুন একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁদের নিজস্ব আইনজীবীও রয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর পর ওই আইনজীবীরাই তাঁদের টাকা ছাড়াই জামিন করিয়ে দেন। পরে তাঁরা জামিনে বেরিয়ে আয় করে আইনজীবীদের টাকা পরিশোধ করেন। ওই আইনজীবীরাও বেশ ডেডিকেটেড’
এই চক্রটির তৈরি করা জাল রুপি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাচার করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় একটি গরুর হাট থেকেই এই রুপি কেনাবেচা হয় বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, আগে পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে ভারতে জাল রুপি আসত। বর্তমানে সেই রুট কঠিন হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে জাল রুপি কিনতে শুরু করেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এক লাখ ভারতীয় জাল রুপি সাত থেকে আট হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে ১০ শতাংশ ঝুঁকি থাকে। তবে কোনো ব্যক্তি জাল রুপি বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা লাভ করতে পারলে তার শতভাগই লাভ থাকে বলে জানান তিনি।