নেপালে আহত আরেকজন ঢাকা মেডিকেলে
নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত শাহীন ব্যাপারী নামে এক বাংলাদেশিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ রোববার বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢামেকে নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে একটি হুইল চেয়ারে করে শাহীন ব্যাপারীকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পাঁচতলার কেবিনে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে পর্যবেক্ষণ করেন।
পরে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, শাহীনের শরীরের ১৬ শতাংশে ডিপ বার্ন বা গভীর পোড়ার ক্ষত আছে। এসব ক্ষত তাঁর হাতে, পায়ে ও বুকে। শাহীন পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত না হলেও তিনি স্থিতিশীল আছেন বলে জানালেন এই চিকিৎসক।
শাহীন ব্যাপারীসহ ওই দুর্ঘটনায় আহত ছয়জন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন বলে জানালেন ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে অন্য চারজনের তুলনায় শাহীন এবং প্রথম দিন দেশে ফেরা শেহরিন আহমেদের অবস্থা কিছুটা খারাপ। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশা করি এই সপ্তাহের শেষেই শেহরিনের একটি অস্ত্রোপচার করা হবে।’
এদিকে, শাহীনকে দেখতে নারায়ণগঞ্জ থেকে ছুটে এসেছেন তাঁর চাচা শাহজাহান ব্যাপারী। তিনি জানান, বিবাহিত শাহীনের সূচনা নামে আট বছরের একটি মেয়ে আছে। তাঁর স্ত্রীর নাম রিমা, তিনি বিমানবন্দর থেকে শাহীনের সঙ্গে ঢামেক পর্যন্ত এসেছেন।
শাহীন ব্যাপারী একাই নেপাল ঘুরতে গিয়েছিলেন বলে জানান তাঁর চাচা। তিনি জানান, শাহীনদের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং হলেও তাঁরা সপরিবারে থাকেন নারায়ণগঞ্জের আদমজী এলাকায়। সদরঘাটে অবস্থিত করিম অ্যান্ড সন্স নামে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন তিনি।
এর আগে ওই দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এঁরা হলেন শেহরিন আহমেদ, মেহেদী হাসান, মেহেদি হাসানের স্ত্রী সাইদা কামরুন নাহার স্বর্ণা, মেহেদী হাসানের ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি এবং শেখ রশিদ রোবায়েত।
অন্যদিকে, আরেক আহত ডা. রেজোয়ানুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়েছে।
গত ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমানটি। ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হয়েছে। বিমানটিতে ৭১ আরোহী ছিলেন।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা জানতে নেপাল ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের দাবি, কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ভুল নির্দেশনা দেওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে এই দাবি অস্বীকার করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।