‘কেন তোমরা এ মরণ যন্ত্র কিনে দিলা’
দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের দাবির মুখে এক মাস আগে তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন বাবা। সেই মোটরসাইকেলই কেড়ে নিল আদরের সন্তানকে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নিতাই বাজার এলাকায় লোনসিং-নড়িয়া সড়কে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে ধাক্কা লেগে নিহত হয় রুবেল ছৈয়াল (১৬)।
রুবেল লোনসিং বকুলতলা গ্রামের রুস্তম আলী ছৈয়ালের ছেলে। সোনসিং উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়ত রুবেল। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট।
নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে রুবেলকে ১৫০ সিসির একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন তাঁর বাবা। মোটরসাইকেল চালানোর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই রুবেল মোটরসাইকেল চালাতে থাকে। আজ শনিবার সকালে রুবেল মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে নড়িয়া উপজেলা সদরের দিকে যাচ্ছিল। বেলা ১১টার দিকে নড়িয়া-লোনসিং সড়কের নিতাই বাজার এলাকার কাছে গিয়ে মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। তখন সড়কের পাশের বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। হেলমেট পরা না থাকায় মাথার সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটির ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় রুবেলের মা আমেনা বেগম। বিলাপ করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমার বুকের মানিককে এনে দাও। আমি মোটরসাইকেল কিনে দিতে বারণ করেছিলাম। কেন তারে তোমরা এ মরণ যন্ত্র কিনে দিলা। কে আমারে মা বইলা গলা জরাইয়া ধরব।’
লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, ‘খুব মর্মান্তিকভাবে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে। ওর জন্য আমার শোকাহত। এভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরদের মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া উচিত নয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারের এ বিষয়গুলো নজর দেওয়া উচিত।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বলেন, ছেলেটি ঠিকমতো মোটরসাইকেল চালাতে পারে না। তাছাড়া সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তার মোটরসাইকেল চালানোর লাইসেন্সও নেই। অনেক গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে সে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। মাথার সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটির ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে।