কোটা সংস্কার : পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার বিক্ষোভ
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আগামী রোববার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচি অনুযায়ী, এ দিন সকাল ১০টায় দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শহরে এ বিক্ষোভ পালিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘গতকাল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনো ধরনের উসকানি ছাড়া পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে মিছিল নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে রওনা দিয়েছিলাম।’
‘কিন্তু হাইকোর্টের সামনে গেলে পুলিশ বলে, আপনারা আর যেতে পারবেন না। তখন আমরা সেখানে অবস্থান নিয়েছি। একপর্যায়ে পুলিশের সহযোগিতায় আমরা ১০ জনের একটি প্রতিনিধিদল যখন মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, ঠিক তখনই পুলিশ কোনো ধরনের উসকানি ছাড়া আমাদের কর্মসূচিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। আটক করা হয় তিনজনকে।’
আন্দোলনের আহ্বায়ক আরো বলেন, ‘এরপর আমরা ৫০-৬০ জন আটককে ছাড়াতে রমনা থানায় গেলে পুলিশ সেখানে আমাদের কৌশলে আটক করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আমাদের একটু পানিও দেওয়া হয়নি।’
‘আমরা বঙ্গবন্ধুর অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু পুলিশ বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালায়,’ যোগ করেন হাসান আল মামুন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো—সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্য পদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।
ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার ঢাকায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও ও দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল আন্দোলনকারীরা। কিন্তু ঢাকায় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে তাঁদের সাতজন আহত হন। কর্মসূচি থেকে আটক করা হয় তিনজনকে। দুপুরের পর তাঁদের ছাড়াতে গেলে আরো ৫০ জনকে আটক করা হয় রমনা থানায়। পরে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাত ৯টার দিকে আটকদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।