গাছের সঙ্গে বেঁধে নববধূকে পুড়িয়ে হত্যা!
মুক্তার (১৮) বিয়ের বয়স মাত্র দুই মাস। নতুন জীবনের নানা স্বপ্নে এখন বিভোর হয়ে থাকার কথা তাঁর। কিন্তু সেসব ভাগ্যে সইল না তাঁর। স্বামীর দেওয়া আগুনেই প্রাণ দিতে হলো তাঁকে।
গত বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জে মুক্তা আক্তারকে গাছে বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁর স্বামী রফিকুল ইসলাম। তাঁকে বাচাতে আসেননি কেউ, বরং সাহায্য করেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
প্রায় সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে আজ বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তা আক্তার।
মুক্তা আক্তারের মা লুৎফুন্নেছা জানান, মাত্র দুই মাস আগে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের ভাটি গাংগাটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুক্তার বিয়ে হয়। রফিকুল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। বিয়ের পর থেকেই রফিকুল ইজিবাইক কিনতে দেড় লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে আসছিল। এর জন্য মুক্তার ওপর নানা রকম নির্যাতন শুরু করে রফিকুল ইসলাম।
কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গের বাইরে অপেক্ষা করছেন মুক্তার স্বজনরা। ছবি : এনটিভি
নির্যাতনের একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় উঠানে গাছের সঙ্গে মুক্তাকে বেঁধে সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় রফিকুল ইসলাম।
আগুনে মুক্তার পুরো শরীর পুড়ে যায়। ওই দিনই তাঁকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুক্তাকে নিয়ে আসা হয়।
কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে গত রোববার মুক্তাকে আবারও কিশোরগঞ্জে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর থেকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে আজ দুপুরে মারা যান মুক্তা।
লাশ বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান জানান, ঘটনা শোনার পর পরই ভাটি গাংগাটিয়া গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। রফিকুল ইসলামকে হাসপাতাল এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।