নেপালে নিহতদের লাশ ফিরে পেতে স্বজনদের উদ্বেগ
নেপালে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্বেগ বাড়ছে স্বজনদের। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল টিম পাঠানোর তাগিদও দিয়েছেন তাঁরা। নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ না জানা পর্যন্ত কোনো ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ানোরও অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই চলছে স্বজনদের মাতম। হতাহতদের স্বজনদের নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে এয়ারলাইন্সটির একটি বিশেষ ফ্লাইট যায় নেপাল। কিন্তু সেই ফ্লাইটে যাওয়া হয়নি দুর্ঘটনায় নিহত পিয়াসের পাসপোর্টবিহীন বাবা-মার। যে ছেলে কদিন পরেই হতেন চিকিৎসক, এখন তার মরদেহ কীভাবে আসবে, কখন আসবে—তা নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না তাঁদের।
পিয়াস রায়ের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় বলেন, সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজে পড়ত। পরীক্ষা শেষে সে ওখানে নেপাল ঘোরার জন্য এই উদ্দেশে গিয়েছে। নেপালের উদ্দেশে প্লেনে ওঠার আগে ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছিল বলে জানান তিনি।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব হাসান ইমাম সরকার ও শিক্ষিকা বিলকিস বানু দম্পতির নিকটাত্মীয়রাও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে ছুটে এসেছেন ইউএস-বাংলা অফিসে, অন্তত দ্রুত যেন নিয়ে আসা হয় তাঁদের স্বজনদের মরদেহ।
এই দম্পতির আত্মীয় মজিদা বীথি বলেন, হয়তো কিছু ছাই ফেরত আসবে। কিন্তু সেটাও তো স্মৃতি। তাই ছাই হলেও যেন দ্রুত তা দেশে আনা হয়, সেই দাবি জানান তিনি। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কত সময় লাগবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না উল্লেখ করে এই নারী বলেন, যদি বাংলাদেশ থেকে কোনো মেডিকেল টিম পাঠানো যেত, তাহলে হয়তো দ্রুত মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হতো।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বলছে, চেষ্টা চলছে দ্রুতই যেন হতাহতদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায়।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল হাসান বলেন, গতকাল থেকেই তাঁদের টিম কাজ করছে। ডিএনএ টেস্টের বিষয়েও কাজ চলছে।
বিমানের ব্ল্যাকবক্সের ওপর নির্ভর করে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে, সেটাই তাঁরা মেনে নেবেন।
গত সোমবার দুপুরে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন। আহত ২০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে।