বিমান দুর্ঘটনা কেড়ে নিল ‘বংশের প্রদীপ’
নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন প্রকৌশলী রকিবুল হাসান (২৯)। তাঁর বাড়িতে চলছে শোকের ছায়া। ‘বংশের প্রদীপ’ রকিবুলের অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
রকিবুল সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই গ্রামের মৃত রবিউল করিমের ছেলে। রকিবুল মাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। একমাত্র বড় বোন বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রকিবুলের গ্রামের বাড়ি বিনানই গিয়ে দেখা গেছে, তাঁর মৃত্যুর খবর টিভিতে দেখার পর থেকে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন স্বজনরা।
রকিবুলের বড় চাচা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। রকিবুলের চাচা জানে আলম ও নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বংশের প্রদীপ ছিল রকিবুল। রকিবুল ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ভ্রমণ পিপাসু ও অত্যন্ত মেধাবী। এ চরের ধুলোবালিতে বড় হলেও তিনি ছিলেন অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম। প্রথম শ্রেণি থেকে সব ক্লাসেই প্রথম স্থান ছিল তাঁর।’
রকিবুলের মৃত্যুর খবর কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এলাকার সবাই ছুটে এসেছেন রকিবুলের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে।
শম্ভুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, রকিবুল ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল। স্কুলের সব ক্লাসেই প্রথম স্থানে ছিল। এলাকার সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করত। তার অকালমৃত্যুতে শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
চৌহালীর বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাহহার সিদ্দিকী জানান, ১৫ দিনের ছুটিতে রকিবুল তাঁর স্ত্রী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষিকা ইমরানা কবির হাসিকে সঙ্গে নিয়ে নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বিমানটি বিধস্ত হওয়ায় পর তাঁরা জানতে পারেন, রকিবুল হাসান মারা যায়। স্ত্রী ইমরানা কবির হাসি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, রকিবুল বিদেশি একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। থাকতেন ঢাকার মিরপুরের একটি ভাড়া বাসায়। গত বছরের বন্যার সময় রকিবুল ও তাঁর স্ত্রী এলাকার মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
এদিকে, চৌহালীর কৃতী সন্তান রাকিবুলের অকালমৃত্যুতে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল লতিফ বিশ্বাস গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।