মোংলা বন্দরে বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ
প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর পর এই সর্বপ্রথম মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নৌযান বহরে সংযুক্ত হলো অত্যাধুনিক অয়েল স্পিল রেসপন্স বা রিকভারি ভেসেল (নদ-নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল বা বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ) পশুর ক্লিনার-০১।
২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল সংলগ্ন সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির ঘটনা ঘটে। এরপর তেল বর্জ্য অপসারণকারী এই জাহাজটি কেনার উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সুন্দরবন ও পশুর চ্যানেল সুরক্ষায় প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ফিনল্যান্ড থেকে কেনা পশুর ক্লিনার-০১ নামক এ জাহাজটি আজ মঙ্গলবার দুপুরে মোংলা বন্দর জেটিতে ভিড়েছে।
এ সময় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান, সদস্য (অপারেশন) আবদুল বাতেন ও হারবার মাস্টার কমান্ডার ওয়ালিউল্লাহ ফিনল্যান্ড থেকে আসা জাহাজটি বুঝে নেন।
এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন এলাকায় ভবিষ্যতে যদি কখনো তেল কিংবা কোনো ধরনের বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে তাহলে এ জাহাজ দিয়ে তা মোকাবিলা ও অপসারণ করা সম্ভব হবে। মূলত সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির ঘটনার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ধরনের জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আরো বলেন, ফিনল্যান্ডের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী প্রতিনিধি দল জাহাজটি নিয়ে দুপুরে মোংলা বন্দরের জেটি ভেড়ে। তবে পশুর ক্লিনার ০১-এর মতো এ ধরনের জাহাজ দিয়ে সাধারণত ছোট ছোট নদী-খালে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ করা সম্ভব হবে। কিন্তু পশুর চ্যানেলের মতো বড় নদীর জন্য এ ধরনের আরো তিন থেকে চারটি অয়েল স্পিল রিকভারি ভেসেলের প্রয়োজন। এ জন্য আমাদের আরো অয়েল স্পিল রিকভারি ভেসেল কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুল ইসলাম বলেন, বন্দরে যেহেতু প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি জাহাজের অবস্থান ও আগমন ঘটে থাকে। সেসব জাহাজ ও বিভিন্ন ধরনের নৌযান থেকে পড়া তরল বর্জ্য অপসারণে জাহাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাহাজটি সংযোজনের ফলে বঙ্গোপসাগর, সুন্দরবন ও পশুর চ্যানেলের পরিবেশ, জলজ-প্রাণীজ সম্পদসহ জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর মোংলার সুন্দরবনের শ্যালা নদীর মৃগামারী এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে ওটি সাউদার্ন স্টার-০৭ নামক একটি ট্যাংকার ডুবির ঘটনা ঘটে। তখন বন্দরের এ ধরনের নিজস্ব বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ না থাকায় ওই সময় সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজ এনে সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ করা হয়। যাতে সময়ক্ষেপণ ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ে।