চাকরির জন্য ঢাকায় এসে যুবক নিখোঁজ
বরিশালের পটুয়াখালী থেকে রাজধানীতে এসেছিলেন জাহিদুল হাসান। উদ্দেশ্য ছিল চাকরির জন্য দেনদরবার করা। কিন্তু ঢাকায় পৌঁছার পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৩০ বছর বয়সী এই যুবকের।
গত ৭ মার্চ জাহিদুলের খালাশাশুড়ি নাজমা আক্তার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানিয়েছেন ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
নিখোঁজ যুবকের স্ত্রী শারমিন আক্তার আজ শনিবার সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পনি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) নামক একটি সরকারি চাকরির বিষয়ে খোঁজ খবর করতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালি থেকে লঞ্চযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন জাহিদ। ১৮ ফেব্রুয়ারি সিদ্দিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কলোনিতে তাঁর বোনের বাসায় যান তিনি। সেখানে বোনের সঙ্গে দেখা করে ঢাকার আজিমপুরে বন্ধুদের কাছে যান।
শারমিন জানান, গত বছর ওই চাকরির জন্য লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন জাহিদ। এরপর থেকেই ওই চাকরিটার জন্য লেগে আছেন তিনি। গত জানুয়ারির ৯ তারিখে মৌখিক পরীক্ষাও দেন। ঢাকায় যাওয়ার আগে জাহিদ স্ত্রীকে বলে যান যেকোনোভাবে যোগাযোগ করে চাকরিটা হয় কি না, তা দেখতে চান তিনি।
ঢাকায় যাওয়ার পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো জাহিদুলের। তবে কোন বন্ধুর বাসায় উঠেছিলেন, তা নিশ্চিত নন শারমিন। সবশেষ গত ৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে জাহিদের সঙ্গে শেষ কথা হয় শারমিনের। এরপর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও জাহিদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান শারমিন।
কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কি না, জানতে চাই শারমিন বলেন, সুমন নামের জাহিদের এক বন্ধু ওই চাকরির জন্য তাকে সাহায্য করছিলেন বলে তিনি জানতেন। সম্ভবত চাকরিটি হওয়ার জন্য কাউকে টাকা দিয়েছিলেন জাহিদ। যার সঙ্গে ফোনে দু-একবার বাগবিতণ্ডাও হয়েছিল। তবে দুশ্চিন্তা করবেন বলে টাকার বিষয়টি জাহিদ সব সময়ই শারমিনের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলেও জানান তিনি।
শেষবার কী নিয়ে কথা হয়েছিল জানতে চাইলে শারমিন বলেন, ‘চাকরির জন্য সে কোনো একজনের সঙ্গে দেখা করতে যাবে বলে আমাকে জানায় এবং সে ব্যস্ত থাকবে বলেও জানায়। এরপরে রাত ১০টার দিকে যখন তাঁকে কল দিলাম তখন থেকেই তার নম্বর বন্ধ দেখাচ্ছে।’
এই বিষয়ে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে কোনো কুলকিনারা করতে পারছি না এখনো। ডিবি ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জানিয়েছি, কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। আবার ভিক্টিমের পরিবারের লোকজনও নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না।’
তবে তারপরও এই ঘটনার জোর তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানালেন ওসি।