কর্মসূচি পণ্ড হওয়ার জন্য বিএনপিই দায়ী : কাদের
বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যাওয়ার জন্য তারাই দায়ী বলে মন্তব্য করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
কাদের আরো বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে, এ ঘটনার জন্য তারাই দায়ী। আওয়ামী লীগ সভা-সমাবেশ করে, রাস্তা বন্ধ করে করে না।’
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সংস্কারকাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এসব কথা বলেন।
গতকাল পূর্বঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী সেখানে জড়োও হয়েছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে যায় সব। লাঠিপেটা করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এভাবে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে বিএনপির বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বিএনপির মহাসচিব সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, ‘তারা প্রেসক্লাবের সামনে যে রাস্তা, অত্যন্ত ইম্পরটেন্ট রোড, এই রাস্তাটা বন্ধ করে যদি তারা সমাবেশ করে, এ অবস্থায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করবে। কারণ রাস্তা বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা বেআইনি। সে বেআইনি কাজটা তারা করতে গেছে। তাদের যেই লোকেরা মামলার আসামি, তাদের নেতাকর্মী। তো মামলার আসামিরা এমনিতেও পালিয়ে থাকে। সেখানে সভা-সমাবেশে আসে। মামলার আসামিকে যদি পুলিশ সামনে পায় তো তাকে ছেড়ে দেবে? মামলার আসামি যদি পুলিশের সামনে পড়ে, তো পুলিশ সেখানে ছেড়ে দেবে কীভাবে? যাদের পুলিশ খুঁজছে। এটা একটা ব্যাপার। আর রাস্তা বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা বেআইনি। তো বেআইনি কাজ তো পুলিশ বন্ধ করবেই। এবং বেআইনি কাজ করতে দেবে না। আওয়ামী লীগের সমাবেশ তো রাস্তায় হয় না। আমরা একটা ময়দানে করেছি। আওয়ামী লীগ তো রাস্তা বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করে না। কাজেই এখানে বৈষম্যের কী হয়েছে?’
বিএনপিকে সভা-সমাবেশে অনুমতি দেওয়ার পেছনে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটা পুলিশ জানে, পুলিশের অনুমতি ১৭ তারিখ তারা চেয়েছে। কেন, এর আগে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করে নাই, সমাবেশ করেনি? এখন, এটার অনুমতি দেয় পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ। এটা তারা আবেদন করেছে, পুলিশই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক। এখানে তো দলীয়ভাবে আমাদের ইন্টারফেয়ারেন্স করার সুযোগ আছে, এটা মনে করা ঠিক নয়।’
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই বলে জানান মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনে সব দলই প্রস্তুতি নিচ্ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন নির্বাচন প্রস্তুতি মানে তো ওই মাসেই ইলেকশন হবে না। ইলেকশন হওয়ার আগে ইলেকশনের সিডিউল ঘোষণা হবে। এবং সেইসঙ্গে প্রস্তুতি তো সবাই নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সবাই নিচ্ছেন। কিন্তু তখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, যেটা বিএনপি বলছে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা এটা তো শিডিউল ঘোষণার পর। শিডিউলের আগে তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারে ইলেকশন কমিশনের কোনো করণীয় নেই। ইলেকশন কমিশনের এ ব্যাপারে করণীয় থাকে, সেটা হলো যখন শিডিউল হবে, তখন নির্বাচনী যে আচরণবিধি, সে আচরণবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না। সেটা দেখা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশনের যে আচরণবিধি সব দলকে তখন সেভাবে ইলেকশনের কর্মকাণ্ড চালাতে হবে।’
এর আগে ওবায়দুল কাদের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের বিভিন্ন পয়েন্টে সংস্কারকাজ ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি গণ্যমাধ্যমকে বলেন, ‘এই সড়ক সংস্কারে ১৮ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই তা শেষ করা হবে। এ ছাড়া সারা দেশের সব সড়ক মহাসড়কগুলোর সংস্কারকাজও বর্ষা মৌসুমের আগেই শেষ করতে আমি নির্দেশ দিয়েছি।’ এর ব্যতিক্রম হলে বা নিম্নমানের কাজ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। পরিদর্শনকালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।