মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম, বরখাস্ত হলেন শিক্ষক
লক্ষ্মীপুরে শাহিন আলম নভেল (৯) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পৌর শহরের উত্তর তেমুহনীতে আল মঈন ইসলামী একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ফয়সাল।
ঘটনার পরে গুরুতর আহত নভেলকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে থানায় অভিযোগ করলেও কোনো আইনি সহায়তা পায়নি বলে অভিযোগ করেছে নভেলের পরিবার।
পরে আজ বুধবার দুপুরে চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির পাটোয়ারীসহ নভেলের পরিবার ঘটনার বিচার চেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেন।
এরপর দুই পক্ষকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নেন ইউএনও। অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ক্ষমা চান। কিন্তু শিশুটির বাবা হাজি লিটন বিচারের দাবিতে অটল থাকায় ইউএনও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ভুক্তভোগীদের আইনি পদক্ষেপের নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আল-মুঈন ইসলামী একাডেমিতে এর আগেও শিক্ষার্থীদের একই কায়দায় অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিশুটির পরিবারসহ কয়েকজন শিক্ষক।
মারধরের কারণে গত ডিসেম্বরে নিজের ছেলেকে এই একাডেমি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান নভেলের ফুপু। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছেলেকে যেভাবে মারছে, আমার ছেলেকেও সেভাবে মারছে। এই জন্য ডিসেম্বরে আমার ছেলেরে এখান থেকে নিয়ে গেছি। ওই মাদ্রাসার মধ্যে ফেলে একটা বাচ্চাকে মারছে। এটা ধামাচাপা পড়ে গেছে। প্রতিবাদ হয়নি। এরা সব সময় মেয়রের দোহাই দেয়, এই দোহাই দেয়, ওই দোহাই দেয়। মাদ্রাসায় এখনো গেলে আপনারা অন্তত ৫০টা বাচ্চা ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পাবেন।’
শিক্ষক ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পড়ালেখার উন্নতির জন্য মেরেছি। এটা আসলে অপরাধ হয়েছে আমার। আপনারা দোয়া করবেন এ রকম আর কখনো হবে না আমার দ্বারা। এটা অনৈতিক কাজ হয়েছে, অন্যায় কাজ হয়েছে।’
এ ব্যাপারে আল-মুঈন ইসলামী একাডেমির প্রধান ও মাদ্রাসার সুপার বশির আহম্মেদ ঘটনাটি অমানবিক উল্লেখ করে অভিযুক্ত শিক্ষক ফয়সালকে বরখাস্ত করার কথা জানান। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তাঁরা।
নভেল সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুজিব উল্যাহ হাজিবাড়ির প্রবাসী হাজি লিটনের ছেলে। সে আল-মুঈন ইসলামী একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অভিযুক্ত শিক্ষক ফয়সাল সমসেরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা।