স্বামীর দেওয়া ‘আগুনে’ পুড়ে মরলেন ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা
পাঁচ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ককে বিয়েতে দাম্পত্যে রূপ দিয়েছিলেন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও সোনিয়া খাতুন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গর্ভবতী হয়েছিলেন সোনিয়া। তবে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই আগুনে পুড়ে প্রাণ হারালেন তিনি। আর তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ স্বামী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার ভোররাতে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোনিয়া খাতুন (২৪)।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোনিয়ার খালা মোমেনা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, পাঁচ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন সোনিয়া ও জাহাঙ্গীর। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকও বসে। সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাহাঙ্গীর স্ত্রী সোনিয়াকে এনায়েতপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার পাশের গলিতে নিয়ে যান। এরপর সোনিয়ার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
এ সময় সোনিয়ার চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগুনে তাঁর মুখমণ্ডল থেকে কোমর পর্যন্ত পুরোপুরি ঝলসে গেছে বলে জানান সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত রাতেই সোনিয়াকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এনায়েতপুর থেকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে দরিদ্র পরিবারটির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্যও ছিল না। পরে আমরা অ্যাম্বুলেন্স এনে তাঁকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ থেকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। আজ ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।’
এ ঘটনায় সোনিয়া খাতুনের মা নূর নাহার বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।