সীমান্তে মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠক বিকেলে
সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করা, মাইকিং করে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের ভয়-ভীতি দেখানো নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে আজ বিকেলে পতাকা বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
শুক্রবার সসালে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার সেক্টরের অধিনায়ক কর্নেল আবদুল খালেক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তারা কাল সাড়া দেয়নি। আজ সাড়া দিয়েছে।’
‘আজ বিকেল ৩টায় পতাকা বৈঠকটি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ফ্রেন্ডশিপ সেতু এলাকায় হবে,’ যোগ করেন সেক্টর কমান্ডার।
গতকাল বৃহস্পতিবার সীমান্তে নতুন করে সেনা সমাবেশ করে মিয়ানমার। তারা মাইকিংয়ের মাধ্যমে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের দিকে সরে আসার জন্য হুমকি দিতে থাকে। এ ছাড়া ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এরপর বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুজিবুল হক জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তুমব্রু সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে। বিজিবি জানায়, মিয়ানমারের সেনাসদস্যরা শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মাইকিং করে সরে যেতে বলছে। এতে সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনা জানার পর বিজিবির পক্ষ থেকেও সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হলেও সাড়া দেয়নি মিয়ানমার।
বিকেলেই তুমব্রু সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উকে ডেকে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে অনেক রোহিঙ্গা তুমব্রু সীমান্তবর্তী নো ম্যানস ল্যান্ডে অস্থায়ী ঝুপড়ি তৈরি করে আশ্রয় নেন। পরে সীমান্ত খুলে দিলে তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশে ঢুকে পড়লেও সেখানে রয়ে যান প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশের তরফ থেকে গত মাসে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আশা করা হলেও মিয়ানমারের নানা রকম শর্তের মুখে শুরু করা যায়নি এই প্রক্রিয়া। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের পরিবারভিত্তিক তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে থামছে না রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ। প্রত্যাবাসন চুক্তির পরেও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকেছে।