‘মাটিতে হাত দিয়ে কাজ করলে লজ্জার কিছু নেই’
কৃষি বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমে থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাটিতে হাত দিয়ে চারা রোপণ করলে বা কাজ করলে লজ্জার কিছু নেই। বরং নিজের হাতে বাগান করলে সেই বাগানে যখন একটা ফল হয়, সেটা ছিঁড়ে খেতে আরো বেশি গর্ববোধ হয়।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার-১৪২৩ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের আমরা লেখাপড়া শেখাচ্ছি। এখন লেখাপড়া শেখার পর অনেকে আর জমিতে কাজ করতে যেতে চাইছে না। আমি বলব, আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে কৃষিকাজে অন্তত আন্তরিক হয়, সে জন্য তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় কৃষির ব্যবহারিক শিক্ষাটা যেন থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য আমি বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’
কৃষি আমাদের জীবন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি থেকে ধীরে ধীরে আমরা শিল্পে উন্নীত হব; কিন্তু কৃষিকে বাদ দিয়ে নয়। কারণ, কৃষিই কাঁচামাল আর খাদ্যের জোগান দেবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষবাস শুরু করেছি। কৃষিকে আমরা যান্ত্রিকীকরণ করছি। এখন হাত দিয়ে চারা রোপণ করা লাগবে না, আমরা মেশিন দিয়ে চারা রোপণ করতে পারব। জমি চাষ করতে পারব, ফসল কাটতে পারব, ফসলকে আলাদা করতে পারব—সবই করা যাবে মেশিন দিয়ে। বিশ্বে গবেষণার মাধ্যমে এগুলো আস্তে আস্তে উঠে আসছে, আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ৩২ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার-১৪২৩ দেন। এর মধ্যে পাঁচটি স্বর্ণ, নয়টি রোপ্য এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক।
দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছ রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মৎস্য অধিদপ্তর স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়।
ব্যক্তি পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার স্থাপন করে অনুকরণীয় নজির স্থাপনের মাধ্যমে কৃষিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আলহাজ মো. মকবুল হোসেন এমপি স্বর্ণপদক লাভ করেন।
প্রতিকূল পরিবেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষি খামার স্থাপনের জন্য নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি ও কৃষি সহায়ক গবেষণার মাধ্যমে ফসলের মানোন্নয়ন ও নতুন জাত উদ্ভাবনে কাঙ্ক্ষিত জিন প্রতিস্থাপন পদ্ধতি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে কৃষি গবেষণা ক্যাটাগরিতে প্রফেসর রাখহরি সরকার এবং প্রচলিত কৃষিপণ্যের পাশাপাশি অপ্রচলিত কৃষিপণ্য উৎপাদনের স্বীকৃতিস্বরূপ মো. আমিনুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ স্বাগত বক্তব্য দেন এবং পদক বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।