নওগাঁয় বোরো বীজ সংকটে কৃষক
গত বছর পৌষের মাঝামাঝি সময়ে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক, সেখানে এবার বৈরী আবহাওয়ায় মাঠেই নামতে পারছেন না নওগাঁর চাষিরা। টানা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশায় জেলার বেশিরভাগ বোরো বীজতলাই নষ্ট হয়ে গেছে।
কিছু কৃষক ধান রোপণ করতে মাঠে নামলেও চড়াদামে বীজ সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাঁদের। এতে খরচ বাড়ার পাশাপাশি ফলন নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা। তবে, কৃষি বিভাগ বলছে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
গত বন্যার ধকল কাটাতে এবার অধিক বোরো চাষের স্বপ্ন নিয়ে বীজতলা তৈরি করেন নওগাঁর বেশিরভাগ চাষি। কিন্তু টানা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশায় ভরা মৌসুমেও বোরো চাষে মাঠে নামতে পারেননি। পৌষের মাঝামাঝিতে ধান রোপণ শেষ করে জেলার কৃষকরা যেখানে পরিচর্যায় নামেন, এবার বৈরী আবহাওয়ায় মৌসুম পেরিয়ে গেলেও বোরো বীজ সংকটে ধান রোপণে দুশ্চিন্তা ভাঁজ ফেলেছে কৃষকের কপালে। কয়েক দিনের টানা কুয়াশায় জেলার বেশিরভাগ বোরো বীজতলা পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার লোলগড়া মাঠে কথা হয় কৃষক মোকলেছুর রহমান, সেকেন্দার আলী ও আবদুল খালেকের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, এবার প্রতি বিঘা জমিতে ১০ হাজার টাকার ওপর খরচ পড়ে যাবে। কারণ আগে একবার ধান রোপণ করে কুয়াশায় তা নষ্ট হয়। দ্বিতীয় দফায় চড়া দামে বীজ কিনে ধান রোপণ করতে হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে বোরো চাষের জন্য জেলায় নয় হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করে কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, এর মধ্যে ৪০ ভাগ বীজতলাই নষ্ট হয়ে গেছে। তবে বোরোর উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনোজিত কুমার।
উপপরিচালক জানান, এবার নওগাঁয় এক লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবিলায় আগামীতে কৃষিক্ষেত্রে দুর্যোগ সহনীয় জাত উদ্ভাবনের তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের এখন ভাবতে হবে, আপৎকালীন এ দুর্যোগ কীভাবে মোকাবিলা করা যায়।’