প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতি, চার পুলিশসহ সাতজন রিমান্ডে
নরসিংদীতে প্রবাসীর গাড়িতে সোনা, টাকা ও মালামাল ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নরসিংদীর রায়পুরা থানার দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া দুই কনস্টেবলসহ চারজনের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারিক হাকিম শাহিন আক্তার এ আদেশ দেন।
রিমান্ড মঞ্জুর করা আসামিরা হলেন রায়পুরা থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম এবং তাঁদের সহযোগী নুরুজ্জামান মোল্লা, সাদেক মিয়া ও গাড়িচালক নূর মোহাম্মদ।
এর আগে ওই এসআই সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ৭০ লাখ টাকা ডাকাতির অভিযোগ ওঠে, যা তদন্তাধীন রয়েছে।
নরসিংদীতে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুজ্জামান মোল্লা, গাড়িচালক নূর মোহাম্মদ, রায়পুরা থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম এবং কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম (বাঁ থেকে)। ছবি : এনটিভি
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা মালয়েশিয়াপ্রবাসী মো. সোহেল মিয়া ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার দেশে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ভাড়া করা গাড়িতে করে স্বজন আব্দুল্লাহসহ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাব এলাকার একটি সিএনজিতে পাম্পে গ্যাস নেওয়ার জন্য চালক গাড়ি থামান। এ সময় অপর একটি প্রাইভেটকারে করে আসা রায়পুরা থানার এসআই সাখাওয়াত ও আজহার আলীসহ চার পুলিশ সদস্য নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যান। পরে পুরানপাড়া ব্রিজ এলাকায় নিয়ে প্রবাসী সোহেলের কাছে থাকা দুটি সোনার বার, মোবাইল ফোনসেট ও টাকা লুট করে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে এমন ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেন।
পরে প্রবাসী সোহেলের আত্মীয় মো. শাহজাহান পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমান, এসআই আবদুল গাফ্ফার ও রুপম সরকার তদন্তে নামেন। পরে তাঁরা সিএনজি স্টেশনের সিসি টিভির ফুটেজে ডাকাতির সত্যতা পান।
ওই সময় সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, রায়পুরা থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলামসহ চার পুলিশ সদস্য সোহেলসহ তিনজনকে আটক করে নিয়ে যান। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে ডিবি পুলিশ এসআই সাখাওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসআই আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলামকে আটক করা হয়। ওই সময় সাখাওয়াতের কাছ থেকে ডাকাতির ১৮ হাজার টাকা, এসআই আজহারুল ইসলামের ট্রাংক থেকে একটি সোনার বার ও সাদেক মিয়ার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের আজ বিচারিক হাকিম শাহিন আক্তারের আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তদন্ত কর্মকতা ডিবির এসআই রুপম সরকার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃতদের সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। আদালতের বিচারক এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম ও গাড়ি চালক নুরুজ্জামান মোল্লাকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে দুই কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম এবং সন্ত্রাসী সাদেক মিয়া ও নূর মোহাম্মদের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।