বাঁশগাড়ীতে আ. লীগের দুই পক্ষে আবার সংঘর্ষ
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার পক্ষের লোকজনের মধ্যে আবার রক্তক্ষয়ী টেঁটাযুদ্ধ হয়েছে। গতকাল বুধবার সংঘর্ষের সময় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
হামলা-পাল্টাহামলায় উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছে। হামলার ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন পাঁচ শতাধিক লোক।
বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে এ হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পর থেকে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রায়পুরার বাশঁগাড়ী ইউপি নির্বাচনে জয়-পরাজয় ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যন সায়েদ সরকারের সঙ্গে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হকের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। গত দেড় বছর ধরে একাধিকবার তাঁদের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় প্রায় ১৫ নিহতসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়।
সায়েদ সরকারের চার সমর্থক নিহতের ঘটনার পর বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হকের সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যায়। এরই মধ্যে সিরাজুল ইসলাম হকের সমর্থকরা শক্তি সঞ্চয় করে গ্রামে পুনরায় অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা চালায়। গত ১১ জানুয়ারি স্থানীয় বাজারে চা খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে গতকাল সিরাজুল ইসলাম চেয়ারম্যানের সমর্থকরা টেঁটা, বল্লম, ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সায়েদ সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।
ওই সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ই্উনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল আহাম্মেদ সুমনের বাড়িসহ অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। টাকা ও বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারসহ অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করা হয়। ওই সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে টেঁটা ও গুলিবিদ্ধসহ প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলা ও ভাংচুর লুটপাটের পর এলাকায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে।