আমরা কাজ দেখিয়ে ভোট নিতে চাই : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা কাজ দেখিয়ে ভোট নিতে চাই। কথা দিয়ে ভোট আদায় করব না আমরা। কথায় মানুষের পেট ভরবে না। বিএনপি কথা মালার রাজনীতি করে আর আওয়ামী লীগ কাজের রাজনীতি করে বলেই নির্বাচিত হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের রাজমহল মফিজার রহমান কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া শীতবস্ত্র ও অর্থ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রংপুরে আমরা হেরে গিয়েছি, কিন্তু আমরা নির্বাচনের রায় মেনে নিয়েছি। সরকারি দল কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। নির্বাচন কমিশন সুন্দর, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করেছে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ স্বাধীন কতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শেখ হাসিনার সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রংপুরের মতো আগামী নির্বাচনেও স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ নীরব ভূমিকা পালনের জন্য নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে যা যা সহযোগিতা করা দরকার সব ধরনের সহযোগিতা শেখ হাসিনার সরকার করবে। এখানে ফখরুল সাহেবদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান মুক্তা, পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ বাচ্চু, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, নতুন বছর শুরু হয়েছে এই বছরেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের এখনো নয়-দশ মাস বাকি। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারা বাংলায় নৌকার জোয়ার উঠেছে। নৌকার এই জোয়ার এত আগে আগে দেখে বিএনপি ভয় পেয়ে গেছে। তারা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় এখন আবোল-তাবোল বলছে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘এই শীতের মধ্যে বিএনপি কোথায়? এই গরিবের মাঝে এখন আওয়ামী লীগ এসেছে। এরপর বিএনপি লোক দেখানোর জন্য আসবে, ফটোসেশন করবে। তারা কক্সবাজারেও ফটোসেশন করেছে। এই উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম যখন বন্যায় কবলিত তখন বিএনপি মহাসচিব এসে ফটোশেসন করে গেছে। আমরা এসেছি সাহায্য করতে, আমরা এসেছি কম্বল নিয়ে, আমরা এসেছি নগদ টাকা নিয়ে।’
বিএনপির উদ্দেশে কাদের বলেন, ১০ থেকে ১২টা কম্বল নিয়ে পত্রিকার সাংবাদিকরা ছবি তুলে নিয়ে গেল। এটা কি রাজনীতি? মানুষের কষ্ট নিয়ে এ রাজনীতি শেখ হাসিনা করেন না। সাড়ে পাঁচ হাজার বলেছি, সাড়ে পাঁচ হাজার কম্বল দিয়ে যাব। নগদ ১১ লাখ টাকার কথা বলেছি, তাই দিয়ে যাব। এখানেই শেষ নয়, আপনাদের কষ্ট যত দিন থাকবে তত দিন শেখ হাসিনার সাহায্য আপনারা পাবেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী বাজেটে শিক্ষকরা তাঁদের দাবির প্রতিফলন বুঝে পাবেন অধৈর্য্য হবেন না এবং কারো প্ররোচণায় কষ্ট করে এই শীতের মধ্যে শহীদ মিনারে গিয়ে অনশন করার প্রয়োজন হবে না। এমপিওভুক্তি পর্যায়ক্রমে হয়ে যাবে। শিক্ষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্ট করে জীবনযাপন করেন। শেখ হাসিনার চেয়ে আপনাদের কষ্ট আর কেউ অতটা বোঝেন না।
পরে সদর ও বোদা উপজেলায় মোট সাড়ে পাঁচ হাজার কম্বল ও প্রত্যেককে ২০০ টাকা করে মোট ১১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়।
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের শুভ উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে তিনি সড়ক পথে বোদা উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেন। বোদা পাইলট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে তিনি অপর একটি অনুষ্ঠানে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন।
পরে সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।