পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না বান্দরবানে
মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হওয়ার পরও বান্দরবানে পাহাড় কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এসকাভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির প্রতিযোগিতায় নেমেছে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় একটি চক্র।
আজ বুধবার সকালেও জেলা শহরের কালাঘাটায় বাহাদুর নগরে গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার উন্নয়ন কাজের নাম ভাঙিয়ে এসকাভেটর দিয়ে বিশাল একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড় কেটে পাঁচটি ট্রাক দিয়ে পাহাড়ের মাটি জলাশয় ও নিচু জমি ভরাটের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতি ট্রাক মাটি এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দিনে দুপুরে প্রকাশে এসকাভেটর দিয়ে জেলা শহরের ভেতরে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে অবৈধভাবে অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরব ভূমিকায় বান্দরবানে পাহাড় কাটার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বাহাদুর নগরে শুধু একটি স্থানে নয়, বসতি স্থাপনের জন্য নগরের চারপাশে পাহাড় কেটে জায়গা সমান করার রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে প্রভাবশালীরা। কালাঘাটা নতুন ব্রিজ এলাকায় এবং বড়–য়াটেক এলাকায়ও কয়েকটি স্থানে পাহাড় কাটা হচ্ছে শ্রমিক দিয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়ায় টিটু বড়ুয়াসহ কয়েকজন বাহাদুরনগরসহ আশপাশের এলাকাগুলোর পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসা করছে। পাহাড় কেটে দেওয়ার জন্য জমির মালিকের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে এবং পাহাড় কাটা মাটি বিক্রি করেও টাকা পাচ্ছে। এসকাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটার কারণে বসতি স্থাপনের জন্যও আরো অনেকে শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটছে। গত বছরও বান্দরবানের কালাঘাটায় পাহাড় ধসে ছয়জনসহ জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু তারপরও পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না।
পাহাড় কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে টিটু বড়–য়া বলেন, ‘উন্নয়ন কাজের জন্য পৌরসভার দেখিয়ে দেওয়া জায়গায় এসকাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে আমরা দুটো পয়সা রোজগার করি।’
তবে বান্দরবান পৌরসভার সচিব তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাহাদুরনগরে রাস্তা তৈরির জন্য কিছু স্থানে পাহাড় কাটা হয়েছে। তবে অন্যদিকে পাহাড় কাটার ব্যাপারে আমার জানা নেই। তার দায়িত্বও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ নিবে না।’
এ ব্যাপারে বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমীন আক্তার জানান, পাহাড় কাটার কোনো অনুমতি নেই। অবৈধভাবে পাহাড় কাটা বন্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।